পরাজিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা, মামলা

Looks like you've blocked notifications!

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সদ্যসমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রে ফল জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে।

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রাম জজ আদালত-৩-এ আজ মঙ্গলবার মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ইউপি সদস্য প্রার্থী জয়নাল আবেদীন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ফল বিবরণীতে এক প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কেটে তা বাড়িয়ে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে পরাজিত প্রার্থীকে। আর সংখ্যা কেটে পরিবর্তনের কারণে এলাকার ভোটারের চেয়ে ভোটসংখ্যা বেড়ে গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার কবাখালি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে।

গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কেন্দ্রটিতে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন রসিকনগর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার আনিছুর রহমান। সেখানে সাধারণ সদস্য প্রার্থী ছিলেন দুজন। একজন জয়নাল আবেদীন (মোরগ প্রতীক), অন্যজন আবুল কালাম আজাদ (টিউবওয়েল প্রতীক)। মোরগ প্রতীকে এক ভোট বেশি পেয়ে জয়নাল আবেদীন বিজয়ী হয়েছেন বলে কেন্দ্রে ভোট গণনার পর জানানো হয়। কিন্তু উপজেলা সদরে গিয়ে প্রিসাইডিং অফিসার ফল বিবরণী কেটে আজাদকে বিজয়ী দেখান।

ক্ষতিগ্রস্ত জয়নাল জানান, প্রিসাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফল বিবরণীতে টিউবওয়েল প্রতীকে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৪০৮। কিন্তু সেটিকে কেটে দিয়ে পাশে লেখা হয়েছে ৪২১। আর মোরগ প্রতীকে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৪০৯। বাতিল ভোট দেখানো হয়েছে ৫৫। মোট প্রাপ্ত ভোট ৮৮৫। অনুপস্থিত ভোটার সংখ্যা লেখা হয়েছে ১৩৯। সে হিসাবে উপস্থিত আর অনুপস্থিত মিলে ভোটার সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজার ২৪। কিন্তু একই ফল বিবরণীর ওপরের অংশে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৯৯৪।

জয়নালের অভিযোগ, অবৈধভাবে আজাদকে বিজয়ী দেখানোর জন্য টিউবওয়েল প্রতীকের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কেটে বাড়ানোর কারণে এলাকার মোট ভোটারের চেয়ে ভোটের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ জানান, কেটে থাকলে প্রিসাইডিং অফিসার কেটেছেন। তিনি এর কিছু জানেন না।

খাগড়াছড়ি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আক্তার উদ্দিন মামুন জানান, প্রিসাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফল বিবরণীতে টিউবওয়েল প্রতীকের ভোটের সংখ্যা কেটে বাড়ানো হয়েছে, তা স্পষ্ট দেখা যায়। এবং সেই ফল বিবরণীতে ভোটার আর ভোটের হিসাবে মিল নেই।

জানতে চাইলে প্রিসাইডিং অফিসার আনিছুর রহমান বলেন, ‘আসলে আমি শিক্ষিত মানুষ হয়ে কীভাবে এ ভুল করলাম, বুঝতে পারছি না। আমাকে আপনি আর্থিক বা শারীরিক শাস্তি যা দেন, তা-ই মেনে নেব। তবু যেন ইজ্জত বাঁচে।’

রিটার্নিং অফিসার জহরলার চাকমা জানান, একটানে সংখ্যাটা কেটে প্রতিস্বাক্ষর করাতে বিবরণীটি গ্রহণ করা হয়েছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখন বাইরে আছি। কপিটা দেখে ভোটার আর ভোটের হিসাবের ব্যাপারটা বলা যাবে।’