কয়েকজনের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হতে পারে না : কমিটি

সুন্দরবন শুধু এই এলাকার মানুষের নয়, এটা একটা বিশ্ব ঐতিহ্য। বিষয়টি বনের ভাবমূর্তির সঙ্গে জড়িত নয়, এটি গোটা জাতির ভাবমূর্তির সঙ্গে জড়িত।
সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান যুগ্ম সচিব মো. মোজাহেদ হোসেন আজ বুধবার এসব কথা বলেছেন। তিনি এদিন সকালে সুন্দরবন পরিদর্শন করেন।
কমিটির প্রধান বলেন, গোটা কয়েক লোকের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হতে পারে না। সুন্দরবন প্রহরী দিয়ে, পুলিশ দিয়ে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি স্থানীয় এলাকাবাসীকে সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
যুগ্ম সচিব মো. মোজাহেদ হোসেন বলেন, ‘আপনাদের সম্পদ রক্ষায় আপনাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীলদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার সুপারিশ করবেন বলে উল্লেখ করেন।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকায় চতুর্থ দফা আগুনের গঠিত তদন্ত কমিটির আট সদস্য আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে এক মতবিনিময় সভায় এলাকাবাসীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন কমিটি সদস্যরা।
এ সময় খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. জহির উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) মামুনুর রশিদ, এসপি সার্কেল এনামুল হক মিঠু, বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মানিকুজ্জামান, চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেন ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধি। সুন্দরবনসংলগ্ন রাজাপুর গ্রামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় স্থানীয় লোকজন সুন্দরবনের অগ্নিকাণ্ড রোধে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
এদিকে, তদন্ত কমিটি সুন্দরবনে প্রবেশের আগে ধানসাগর স্টেশনের বন কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদকে বহিষ্কার করা হয়। সকালেই সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সহিদুল ইসলাম বহিষ্কারের কথা জানান। সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকায় চতুর্থ দফা আগুনের ঘটনায় সুলতান মাহমুদকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগের ঘটনায় তাঁকে প্রত্যাহার করে চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে বদলি করা হয়েছিল।
গত ২৭ এপ্রিল সুন্দরবনের তুলাতলায় চতুর্থ দফায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। তিনদিন চেষ্টার পর গত শনিবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নেভাতে সক্ষম হন। এ সময়ের মধ্যে সুন্দরবনের ব্যাপক এলাকায় গাছ পুড়ে গেছে। এখন ওই এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে পোড়া গাছের সারি। আগুনের তাপে সুন্দরবনের সুন্দরী, গেওয়া, গরান, বলাসহ গুল্ম গাছ ওই এলাকায় শত শত গাছ শুকিয়ে গেছে। অনেক গাছের নিম্নাংশ পুড়ে গেছে। এ তিনটি আগুনের মোট ২২ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।