ফেনীতে ইউপি নির্বাচনে এসআইসহ গুলিবিদ্ধ ১২, আহত ২৫

Looks like you've blocked notifications!
ইউপি নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকে ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি : এনটিভি

ফেনী সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার ভোটগ্রহণ চলাকালে এসব ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন অন্তত ১২ জন।

এদিকে সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বেলা ১১টার মধ্যেই কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন। সেই সঙ্গে এসব ইউনিয়নে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন তাঁরা।

সকালে ভোটগ্রহণের শুরুতে ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জগন্নাথ সোনাপুর ভোটকেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রার্থী ও তাঁর স্ত্রীসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। আহতরা হচ্ছেন মো. শাহজাহান, তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম, শাহাদাত হোসেন, জয়নাল আবেদীন, জসিম উদ্দিন ও আমান উল্লাহ। একই উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সতের কেন্দ্রে দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। এঁরা হলেন কাজী রাসেল, রফিকুল ইসলাম খোকন, বাবলু, আরাফাত, কবির মাস্টার, মুসা মিঞা।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের অলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তারা হাতবোমা ও গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশের উপরিদর্শক মো. ইয়াছিন গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন প্রায় ১০ জন।

এদিকে ছাগলানইয়া উপজেলার গোপাল ইউনিয়নের দক্ষিণ নিজকুঞ্জরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র জুলফিকার আলী ও মুহুরীগঞ্জ কেন্দ্রে সফিকুল ইসলাম নামে দুই ব্যক্তি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট দিতে গেলে নির্বাহী হাকিম সোহেল রানা দুজনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেন।

ঘোপাল ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল হককে সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা বেধম মারধর করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই কেন্দ্রে ৩০০টি জালভোট বাতিল করেন নির্বাহী হাকিম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। 

ফেনী সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সঞ্জয় কুমার পাল জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা অন্তত ১২ জন গুলিবিদ্ধ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দুপুরে ছাগলনাইয়া উপজেলার নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ ভোটাররা। দুপুর ১২টার দিকে ঘোপাল ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া এলাকায় ভোটকেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেওয়া ও ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন সাধারণ ভোটাররা।

জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুম সারা দিনে নানা অপরাধে আটকের সঠিক সংখ্যা জানাতে না পারলেও বিভিন্ন কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি উপজেলায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে।

এই দুই উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়ন, ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নে দুজন চেয়ারম্যান ও ৩৫ জন মেম্বার প্রার্থী আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হওয়ায় তারা আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি আটটি ইউনিয়নের ৩১ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তিন শতাধিক মেম্বার পদপ্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে।