চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা, নিহত ৭

Looks like you've blocked notifications!

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই সাতজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। 

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এলাকায় দুর্বৃত্তরা বাসের ভেতর পেট্রলবোমা ছুড়ে মারলে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন যশোর শহরের ঘোপ এলাকার ঠিকাদার নূরুজ্জামান পপলু (৫০) ও তাঁর মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইশা (১৬), নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ভাড়ারিয়া গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী আছমা বেগম (৩৫) ও তাঁদের ছেলে শান্ত মজুমদার (১৩), কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং গাইয়াপাড়ার বাসিন্দা ছিদ্দিক আহমদের ছেলে আবু তাহের (৪০) ও ছালেহ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইউছুফ (৫০)। পেট্রলবোমায় নূরুজ্জামানের স্ত্রী মাহফুজা বেগম মিতা, আছমা বেগমের আরেক সন্তান মুন্না মজুমদারও (১৪) আহত হয়। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আইকন পরিবহনের একটি বাস কক্সবাজার থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল। পেট্রলবোমা মারার সময় যাত্রীরা ঘুমিয়ে ছিল। ঘটনাস্থলেই আগুনে পুড়ে সাত যাত্রীর মৃত্যু হয়। দগ্ধ হয় অন্তত নয়জন। বাস থেকে নামতে গিয়ে আহত হয় আরো সাতজন।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) টুটুল চক্রবর্তী এনটিভিকে বলেন, বাসের ভেতর থেকে সাত যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের শরীরের ৮০ ভাগ, চারজনের ৪০ থেকে ৫০ ভাগ পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, এ ছাড়া আহত ১০-১২ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা লাফিয়ে পড়ে সামান্য আহত হয়েছে বলে জানান এসপি।

র‍্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাকিব বলেন, আগুনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ র‍্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল এনটিভিকে বলেন, তিনি ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পরিদর্শন করেছেন। হামলার ঘটনায় তাঁর স্থানীয় এক বন্ধুও মারা গেছেন। তিনি বলেন, মানুষ হত্যার এ অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। 

এনটিভি অনলাইনের প্রতিবেদক সৈয়দ সামিউল বাশার জানান, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি কুমিল্লায় দগ্ধ সাত যাত্রীর চিকিৎসা চলছে। তাঁরা হলেন কক্সবাজারের মোহাম্মদ হানিফ (৩৫), রাশেদুল ইসলাম (২০), মানিকগঞ্জের ফারুক আহমেদ (২৩) ও তাঁর বন্ধু মোহাম্মদ জিলকদ (১৯), ফরিদপুরের মো. আরিফ শিকদার (৩০), নারায়ণগঞ্জের শফিকুল ইসলাম (১৮) ও মোহাম্মদ শরিফ। এঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। বর্তমানে ছয়জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

মানিকগঞ্জ থেকে আসা জিলকদের চাচা আবদুল আজিজ সরদার এনটিভি অনলাইনকে জানান, জিলকদ তাঁর চার বন্ধুকে নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়েছিলেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকায় ফেরার পথে কুমিল্লায় তাঁদের বাসে পেট্রলবোমা ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। তাঁর দুই বন্ধু কুমিল্লায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তদন্ত কমিটি গঠন ও পুরস্কার ঘোষণা : ঘটনা তদন্তের জন্য কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলামুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা পুলিশ ।