এরশাদের হাসি পায়
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কথাটা শুনি। হাসি পায়। কথাটা শুনলে হাসি পায়। আমাদের সময় কোথায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল? ১৯৯১ সালে কোথায় ছিল লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড? সেদিন যদি ইলেকশন করতে পারতাম, আমি আবার ক্ষমতায় আসতে পারতাম, জাতীয় পার্টি আবার ক্ষমতায় আসত।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় যুব সংহতির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এ কথা বলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, ‘সেদিন একটাই দাবি ছিল, আপনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে ইলেকশন করেন। আর কোনো দাবি ছিল না। আমি ক্ষমতা ছেড়ে দিলাম ইলেকশন করবো বলে। ইলেকশন তো করতে পারলাম না। জেলে গেলাম। মন্ত্রীরা জেলে গেল। অকথ্য অত্যাচারের সম্মুখীন হলাম।’
‘অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হলো, অফিসে তালা দেওয়া হলো। আমাদের ছেলেদের মারা হলো, লাথি মারা হলো। সেই ছবি আজও আছে। ছয় বছর জেলে ছিলাম। তার মধ্যে সাড়ে তিন বছর একা ছিলাম। নির্জন কারাবাস। এক পুলিশের কনস্টেবল ছাদের ওপর থেকে আমার সাথে কথা বলেছিল, ওর চাকরি চলে যায়,’ বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
এরশাদ আরো বলেন, ‘আমার জন্য যদি একটা গাড়ি ভাঙতে হয়, সেই মুক্তি আমি চাই না। যে গাড়িটি ভাঙল, সেটি কার? আমারই কোনো ভাইয়ের। গাড়ি তো বিদেশ থেকে দেশের টাকা দিয়ে নিয়ে এসেছে। কেন ভাঙব? এখন গাড়ি পুড়ছে, বাস পুড়ছে, ট্রেন পুড়ছে, গাছ পুড়ছে। কিচ্ছু যায় আসে না। হাজার হাজার গাছ। এই একটি গাছ মানুষের সন্তানতুল্য। এই হলো আমাদের রাজনীতি। গাছ কেটে, রাস্তা খুঁড়ে, ট্রেন লাইনচ্যুত করে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরে এই রাজনীতি চলছে। এই রাজনীতি শেষ হবে একদিন না একদিন। শান্তি ফিরে আসবে একদিন না একদিন।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘মানুষ চেয়ে আছে আমাদের দিকে। একটাই কথা বলে, এরশাদ সরকার ভালো ছিল। আমি প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। মানুষকে জেলে দেই নাই। আমিই একমাত্র রাজনীতিবিদ, সারা পৃথিবী একলা ঘুরি। আমার সঙ্গে পুলিশ নাই, গানম্যান নাই। আমি জানি, আমি অন্যায় করি নাই। আমাকে মারার কেউ নাই। আমি আর আমার ছেলে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াই একলা। সে আত্মবিশ্বাস আমার আছে। কারো সাথে কখনো অন্যায় করিনি (আই হ্যাভ নট ডান এনিথিং রং উইথ এনিবডি)। বহু লোকের উপকার করেছি। আমার দরজা থেকে কেউ ফিরে যায়নি। মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়েরা এখানে আছেন। যাঁরাই এসেছেন বাড়ি দিয়েছি, জমি দিয়েছি, বাজার দিয়েছি। আমার বাড়ি থেকে কেউ ফিরে যায়নি। সে জন্য বুক ফুলিয়ে চলি আমি। আমি জানি আমাকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’