সেচ সুবিধা পাবেন ৬৬৩ হেক্টর জমির মালিক

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্লুইস গেট। আর এর ফলে ৬৬৩ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাবেন এলাকার কৃষকরা।
এই স্লুইস গেট নির্মাণ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় দুই কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ক্ষুদ্র পানি সেচ প্রকল্পের আওতায় সরকার দিনাজপুরের উত্তরাঞ্চলের শিবনগর ইউনিয়নে গোপালপুর এলাকায় কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য এই স্লুইস গেট নির্মাণ করছে। পাশাপাশি গেট থেকে উত্তরদিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি খাল খনন করা হচ্ছে। মূলত সারা বছর এই খাল যেন পানি ধরে রাখতে পারে সে জন্য এই স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়।
গত ২১ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এই স্লুইস গেটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
স্লুইস গেটটি নির্মাণের পুরো তদারক করছেন দিনাজপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান। তিনি জানান, দীর্ঘ চার মাস দিন-রাত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনবল নিয়োগ করে গেটটি নির্মাণ করছে। এর ৯৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এই গেটের কাজ শেষ হওয়ার পর তা চালু হলে শিবনগর ইউনিয়ন শুধু নয় তার আশপাশ এলাকার শত শত একর জমিতে খালের পানি ব্যবহার করে কৃষি কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
ভবিষ্যতে এই খালের ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে পানি সরবরাহ করবে তিলাই খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। এরই মধ্যে খালটি পুনঃখননের কাজও শুরু হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৪ লাখ টাকা। এই সমিতি পরিচালনার জন্য সদস্য রয়েছেন প্রায় ৪২০ জন। প্রকল্পটির কাজ সম্পূর্ণ হলে ৬৬৩ হেক্টর জমিতে কৃষকরা সেচ সুবিধা পাবেন।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী এলজিইডির কার্যসহকারী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন,‘আমরা কাজটি শুরু থেকে এ পর্যন্ত শেষ করেছি। সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে। আশা করছি আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে কাজটি সম্পূর্ণ হবে। এরপর স্লুইচ গেটটির আনুষঙ্গিক কাজ ঠিকাদার শেষ করবে।’
স্লুইস গেট নির্মাণের কাজটি মানসম্মন্নভাবে সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান নিজেই প্রকল্পটির কাজ তদারক করেছেন, যাতে কাজের কোনো ত্রুটি না থাকে।
এ ব্যাপারে তিলাই খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. মহিদুল ইসলাম জানান,এই প্রকল্পটি চালু হলে ভবিষ্যতে এই খালে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা হবে। এতে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা লাভবান হবে।
দুধিপুকুর গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে স্লুইস গেট নির্মাণ নিয়ে তাঁদের উৎসাহউদ্দীপনার কথা। এদের মধ্যে হাসান আলী ও পূর্ব জাফরপুর গ্রামের কৃষক মাহমুদ আলী জানান,এই গেট নির্মাণ তাঁদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। এখন তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই স্লুইস গেট নির্মাণ হওয়ায় বাঁধের পানি কৃষিকাজ এবং মাছ চাষে ব্যবহার করা যাবে। সেচ সুবিধা পেলে কৃষিতে উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষকদের মধ্যে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।