পটোলক্ষেতের সঙ্গে শত্রুতা!

Looks like you've blocked notifications!
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামখানার বাঁশের ভিটা গ্রামের ভূমিহীন বর্গাচাষি আবুল হোসেনের তিন বিঘা জমির পটোলক্ষেত দুর্বৃত্তরা শত্রুতা করে কেটে দিয়েছে। ছবি : এনটিভি

‘এখন আমি সংসার চালাব কীভাবে। ঋণের কিস্তিই বা কীভাবে পরিশোধ করব। পটোলগাছগুলোকে রেখে দুর্বৃত্তরা আমার গলায় কেন ছুরি চালায়নি।’

গতকাল শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তদের কেটে দেওয়া সাড়ে তিন বিঘা ফলন্ত পটোলক্ষেতের পাশে বসে এভাবে বিলাপ করছিলেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বর্গাচাষি আবুল হোসেন (৬০)। 

উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের পশ্চিম রামখানার বাঁশের ভিটা গ্রামের ভূমিহীন বর্গাচাষি আবুল হোসেন দুই বছর ধরে পাশের প্রসাদের কুটি গ্রামে বিঘা প্রতি আট হাজার টাকা বার্ষিক চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। এ জন্য তিনি এনজিও এবং কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন।

গত মে মাস থেকে প্রতি সপ্তাহে ৩০-৩৫ মণ করে পটোল ওঠাচ্ছিলেন আবুল হোসেন। এ দিয়ে তাঁর ছয়জনের পরিবার চলত। আশা ছিল, পটোল বিক্রির টাকা জমিয়ে আগামী মৌসুমে আরো কিছু জমি বর্গা নেবেন। কিন্তু তাঁর সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। আজ সকালে ক্ষেতে গিয়ে তিনি দেখতে পান, পটোলগাছের গোড়া কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

প্রতিবেশী মোস্তফা কামাল, মিজানুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন, আবুল কাশেম, নাজমুল হোসেন জানান, আবুল হোসেন একজন নিরীহ ভূমিহীন বর্গাচাষি। তার এমন ক্ষতি মানা যায় না। এ ক্ষতি তিনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।

জমির মালিক খলিলুর রহমান ও নূর ইসলাম জানান, আবুল হোসেন সাড়ে তিন বিঘা জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে সবজির চাষাবাদ করে আসছিলেন। কে বা কারা তার জমির পটোলগাছ কেটে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কেউ প্রতিহিংসাবশত হয়ে এমন ক্ষতি করেছে।

রামখানা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল আলিম বলেন, আমি বিষয়টি শোনার পরে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত দেখে এসেছি। যারা এ অপকর্মটি করেছে তারা শুধু ওই দরিদ্র কৃষকের ক্ষতি করে নাই, দেশের কৃষি অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি করেছে। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।