বৃষ্টি-পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে সবজিক্ষেত প্লাবিত

Looks like you've blocked notifications!
কুড়িগ্রামে ৫০০ হেক্টর সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে। ছবি : এনটিভি

কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে পটল, ঢেঁড়স, করল্লাসহ বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন সবজীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, নদী তীরবর্তী ও চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় উঠতি ফসল বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় নদ-নদী তীরবর্তী ও চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টায় ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৫ মিলিমিটার, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্টে ৪৫ মিলিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে পাঁচ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে সদর উপজেলার পাঁচগাছি ও যাত্রাপুর, রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা এবং চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির পটল, ঢেঁড়স, করল্লাসহ গ্রীষ্মকালীন সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির সবজিক্ষেত।

মৌসুম শেষ না হতেই এসব সবজিক্ষেতে পানি ঢুকে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা। বৃষ্টি ও নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় এর প্রভাব কাঁচা বাজারে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।  

সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক আমজাদ জানান, তিনি দেড় একর জমিতে পটল চাষ করেছেন। হঠাৎ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তাঁর পটলক্ষেত তলিয়ে গেছে। পটল বেচে সংসার চলত- এখন আর কোনো উপায় নেই।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ‘বাণিজ্যিকভাবে সবজি চাষে পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভ তো দূরের কথা আসলটাই ঘরে তুলতে পারলাম না। লাল শাক, পুইশাক তো গেছে, পটলক্ষেত একবার পানি উঠলে সেই ক্ষেত আর টেকে না। এখন কী হবে আল্লাহ জানেন।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার নিচু জমির কিছু সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। লতানো জাতীয় সবজিক্ষেতে পানি ঢুকে পড়লে সেই ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পানি নামার পর স্বল্পকালীন সবজি চাষের পরামর্শ দেব।’