‘শিশু সুরক্ষায় প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা’

Looks like you've blocked notifications!
সাতক্ষীরায় শিশু পাচার নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : এনটিভি

‘কেবল আইন শিশুদের সুরক্ষা দিতে পারে না । শিশু সুরক্ষায় নাগরিক সমাজের বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকা জরুরি। এর জন্য দরকার সামাজিক সচেতনতা। যত প্রতিকূলতাই থাকুক সামাজিক সংগঠনগুলো আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হলে সমাজ থেকে এই অভিশাপ দূর করা সম্ভব।’

আজ শনিবার সাতক্ষীরার ক্যাথলিক মিশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বেসরকারি সংস্থা রাইটস পরিচালিত শিশুপাচার রোধবিষয়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক উম্মে কায়সার সুমনা। এ সময় বেসরকারি সংস্থা ক্রিসেন্ট-এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক  সভাপতি ও এনটিভি  প্রতিনিধি সুভাষ চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে নানা উপাত্তের সঙ্গে আলোচিত হয় বাল্যবিবাহ এবং পাচার প্রবণতা। মা ও শিশুপাচার এবং তাদের পরিণতি কী তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক উম্মে কায়সার সুমনা বলেন, ‘শিশু সুরক্ষায় প্রথম কাজ শিশুর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করা। শিশুর পুষ্টির ওপরও গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। শিশুকে যাতে কোনোভাবেই কেউ শ্রমে বিনিয়োগ করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। রাইটস সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর জেলায় শিশুপাচাররোধে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে অনেকটাই আশাব্যঞ্জক অর্জন হয়েছে।’

উম্মে কায়সার সুমনা জানান, শিশুপাচাররোধে জেলা পর্যায়ের পরামর্শ সভা, স্কুল অভিযান, সংবাদ সম্মেলন, স্কুলশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, বেসরকারি সংস্থা প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ, পুলিশ, আইনজীবী ও সংবাদকর্মীদের নানা প্রশিক্ষণের আওতায় এনে পাচার রোধের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি জুন পর্যন্ত ছয় মাসে এক হাজার ৬০০ ছেলেশিশু, মেয়েশিশু ও নারী-পুরুষ উপকৃত হয়েছে উল্লেখ করে সুমনা আরো বলেন, এই প্রকল্প ২০১৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর ও বলবৎ থাকবে। তিনি জানান, চলমান এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২১০ জন স্কুলশিক্ষক, ১২০ জন সংবাদকর্মী এবং ১৪৫ জন আইনজীবী ও পুলিশ যথাযথ প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন এবং তা বাস্তবে প্রয়োগ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, বিদেশে পাচার হয়ে যৌন নির্যাতনের শিকার ৬৭৯ নারীকে উদ্ধার করে তাঁদের পুনর্বাসনে রাইটস ভূমিকা রেখেছে। তাঁদের মধ্যে ২৭৩ জনকে আইনি সহায়তা দিয়ে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া সহিংসতার শিকার আরো ৭৫ নারী ও শিশুকে উদ্ধার ও পুনর্বাসনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সুমনা আরো বলেন, ‘চাকরির জন্য পাচারের শিকার ১৭৬ যুবককে ইরান, জর্ডান, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, দুবাই ও ভারত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কমপক্ষে ২১৫ জন নারীকে তাঁদের জীবিকা অর্জনে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’ অপর দিকে পাচার ও সহিংসতার শিকার এমন পাঁচটি মামলায় আসামিরা সাত থেকে কুড়ি বছর সাজা ভোগ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়া এ ধরনের ৭২০টি ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করে সে সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করছে রাইটস।