সম্মাননা পেলেন ২৩ তরুণ উদ্যোক্তা

Looks like you've blocked notifications!
আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০১৪ পাওয়া তরুণরা। আরো আছেন সম্মাননা প্রদানকারী ফেসবুক গ্রুপ ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’-এর কর্মীরা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন একদল তরুণ উদ্যোক্তা। এঁদের কয়েকজন নিজেদের উদ্যোগের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। সম্মাননা নিতে এসেছেন। সারা দেশ থেকে আসা ২৩ উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দিয়েছে অনলাইন গ্রুপ ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’। এঁদের একজন পেয়েছেন বিশেষ উদ্যোক্তার স্বীকৃতি—নুরুল কাদের সম্মাননা। 

আজ শুক্রবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে উদ্যোক্তা সম্মাননা-২০১৪ ও ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’ ফেসবুক গ্রুপের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়। সম্মাননা অনুষ্ঠানের পার্টনার হিসেবে ছিল এনটিভিবিডিডটকম, অপটিমা এইচ আর সলিউশন, ড্যাফোডিল গ্রুপ ও প্রাইমএক্স ইনফোসিস।                                                                                                                          
উদ্যোক্তা সম্মাননা-২০১৪ আয়োজন করেছে ফেসবুক গ্রুপ ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব’। ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় গ্রুপটি এবার চার বছর পার করছে। এই গ্রুপের মতে, কর্মসংস্থানের একটি বড় অধ্যায় হলো আত্মকর্মসংস্থান। উদ্যোক্তারা কেবল নিজের দায়ই নেন না, তাঁরা সমাজের বড় দায়ও কাঁধে নেন। জাতীয় উদ্যাক্তা তৈরিতে নতুন ধারা গড়তেই এই গ্রুপ। এখন পর্যন্ত এই গ্রুপের সচল সদস্যসংখ্যা ৪১ হাজার ৭৩২। 

উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০১৪ অনুষ্ঠান বিকেল ৫টায় শুরু হয়। তবে এর আগেই তরুণ উদ্যোক্তাদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাঙ্গণ। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন বাংলাদেশে মুক্ত সফটওয়্যার আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব মুনির হাসান। 

অনুষ্ঠানে ২৩ তরুণ উদ্যোক্তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তি, পণ্যসেবা বা পর্যটন খাতে এই উদ্যোক্তারা কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি অনেক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করেছেন। 

২৩ উদ্যোক্তা সম্মাননার মধ্যে ১৩টি ছিল নবীন উদ্যোক্তা স্মারক। এই সম্মাননা পেয়েছেন ইমরাজিনা খান (ক্রিয়েটিভ কিটেন), লিটন দেবনাথ (কক্সবাজারশপডটকম), ফারজানা হাসিন (সাফান ট্রেডস ইন্টারন্যাশনাল), খালেদ (বন্ধুডটকম), দেওয়ান সায়েদুর রহমান (স্কিলড হোম সফট), আসফিয়া আহমেদ ও মাহমিদ হাসান (সুগার পাফ), কায়সার হামিদ (নিউ মুন ক্লদিং ডিজাইন হাউস), মো. শামসুদ্দিন জাফর (বিডিঅ্যাগ্রোমার্কেট), সালেহিন সাগর (টেককেয়ারবাংলাদেশ), মুনাফ অর্ণব (গ্রিনআইটি), সৈয়দ রেজওয়ানুল ইসলাম রুবেল (টেকনেক্সট), আবু আশরাফ মাসনুন (ট্রানসেনডিও), ইরা নায়েরা (দ্য পপ আপ ফ্যাক্টরি)। 

উদ্যোক্তা স্মারক পেয়েছেন নয়জন। এঁরা হলেন মাহমুদুল হাসান সেলিম (ফ্রিল্যান্স আইটি ল্যাব), শফিউল আলম (অ্যাডভান্স অ্যাপ বাংলাদেশ), সীমা হালদার (রংধনু জামদানি), এস এম বায়েজিদ (ভাইপারডটকমবিডি), আশিকুর আলম খান (প্রিয়শপডটকম), বিপ্লব ঘোষ রাহুল (ইকুরিয়ার), নাহিদা পারভীন (আইটিসলিউশনদিনাজপুর), সাইফুল ইসলাম (আমারগেজেট), আরাফাত রহমান (বাইনারি ইমেজ)। 

তরুণ উদ্যোক্তা ২৩ সম্মাননার একটি ছিল বিশেষ সম্মাননা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের পথিকৃত ও এই খাতের অন্যতম উদ্যোক্তা মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদের সম্মাননা। বাংলাদেশের পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টিকারী উদ্যোক্তা মাহমুদ হাসান খানকে নুরুল কাদের সম্মাননা দেওয়া হয়। ট্রিপ টু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাহমুদ হাসান খান বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটককে দেশের গ্রাম ও প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছেন। 

তরুণ উদ্যোক্তাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল উদ্যোক্তাসহ অনেকে। উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা, ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সবুর খান, বিডিভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন, প্রগতি সিস্টেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাদাত খান, অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ, বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সদস্য তানিয়া ওয়াহাব, বিশ্বের উদ্যোক্তাবিষয়ক প্রতিযোগিতা স্টার্ট আপ কাপের প্রতিষ্ঠাতা সিন গ্রিফিন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যারাকসিয়া মার্টিরোসিয়ান। 

সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের উপস্থিত অতিথিরা তরুণ উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করে বক্তব্য দেন। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা তাঁর বক্তৃতায় উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। 

অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তাবান্ধব গণমাধ্যম-২০১৪ পুরস্কার পায় যমুনা টেলিভিশনের স্টার্ট নামক অনুষ্ঠানের কলাকুশলীরা। এ ছাড়া পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা স্মারক ও অপর চারটি প্রতিষ্ঠানকে পার্টনার স্মারক দেওয়া হয়।