জঙ্গিবাদ দমনে ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ করা উচিত : রিজভী
জঙ্গিবাদ দমনে ব্যর্থ এ সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
আজ শুক্রবার দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী আহমেদ।
বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘দেশে এই যে জঙ্গিদের উৎপাত, এখানে বিদেশিরা জড়িত বলে সরকার যে অভিযোগ করছে, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। আপনি একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের অভ্যন্তরে একের পর এক রক্ত ঝরা ঘটনা ঘটছে সেই ঘটনায় আপনার কি কোনো দায়িত্ব নেই?’
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘কখনো আপনি (প্রধানমন্ত্রী) দায়ী করেন, দেশের বৃহত্তর বিরোধী দল বিএনপিসহ বিরোধী রাজনীতিকদের। এখন আপনি দায়ী করছেন বিদেশি শক্তিকে। সম্পূর্ণ রূপে আপনি একজন ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী। আপনার কিছুই করণীয় নেই? কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী আপনি তৈরি করতে পারছেন না জনগণকে, জাতিকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে। এই চরম ব্যর্থতার কারণে আপনার এই মুহূর্তে বিদায় নিয়ে নেওয়া উচিত। আপনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে জনগণই তখন দায়িত্ব নেবে অশুভ শক্তিকে বিনাশের।’
পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘অস্ত্র দেওয়া হয়েছে কি আপনাদের পকেটে রাখার জন্য? বিরোধী দলের মিছিল দেখলেই সেখানে সেটা চালাতে হবে। অথচ আজকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে অশুভ শক্তির নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে সেই নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করে দমন করতে পারছেন না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কাজে লাগানো হয় দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য, দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার জন্য। আর এটা করতে গিয়ে তাদের লাইসেন্স দেওয়া হয় গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ নানা প্রকারের অনাচারের। আর এই কারণে দেশের অনাচে-কানাচে যে উগ্রবাদ ডালপালা মেলে বিস্তার লাভ করছে সেটাকে তারা রুখতে পারে না, প্রতিরোধ করতে পারে না।’
রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘এই সরকারের এমন কিছু অন্তর্নিহিত বিষয় আছে যেটি তারা আজ জনগণকে জানতে দিতে রাজি নয়। সন্দেহভাজন জঙ্গিকে ধরছে অথচ তাদের আইনি প্রক্রিয়ায় না এনে তদন্ত প্রক্রিয়ায় না এনে, বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হচ্ছে। তাহলে জঙ্গিবাদ কারা, এই উগ্রবাদী শক্তি কারা, তাদের সাথে সরকারের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে আজকে মানুষের কাছে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। চারদিক থেকে জনগণের মাঝে যে ভয়ের, যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এ জন্য সরকার দায়ী।’
এ সময় বিএনপির চেয়ারপরসন খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আহ্বান করেছেন জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি দিয়ে উগ্রবাদকে দমন করা সম্ভব হবে- যদি আজকে দলমত নির্বিশেষে সব দল মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে। সেদিকে সাড়া না দিয়ে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। একের পর এক শর্ত আরোপ করে জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান তা এড়িয়ে যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা, সহসভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, মোস্তাফিজুর রহমান, শফিকুল ইসলাম বেবু, সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক, যুগ্ম সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, সাবেক পৌর মেয়র নূর ইসলাম নূরু, বিএনপি নেতা হাসিবুর রহমান হাসিবসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।