ব্রহ্মপুত্রের পানিতে বন্দি ৪০ হাজার মানুষ
উজানের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ শাখা নদীগুলোর।
ফলে চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী, চর ও দ্বীপচর এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। হাতে কাজ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার শ্রমজীবী মানুষজন। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাট সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র তীরের বাসিন্দা আবেদ আলী জানান, চারদিকে পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। ফলে কোনো কাজও করতে পারছেন না তাঁরা। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুব বিপদের মধ্যে আছেন বলেও জানান তিনি।
চিলমারী উপজেলার পত্রখাতা ইউনিয়নের ঝরনা বেগম জানান, ঘরের ভিতর পানি ঢুকে পড়েছে। কোনো রকমে চেয়ারের উপর চুলা বসিয়ে রান্না-বান্না করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ তাঁদের খোঁজ নিতে আসেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি কোনো ত্রাণ পাননি বলেও জানান ঝরনা বেগম।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী জানান, তাঁর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা ব্রহ্মপুত্রের চর। চরাঞ্চলের সব ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। বন্যাকবলিত মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু সরকারিভাবে এখনো কোন ত্রাণ সহায়তা আসেনি। ফলে তাঁর পক্ষেও কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঈদের আগে বন্যাকবলিত এলাকাসহ সব ইউনিয়নে রিলিফের চাল দেওয়া হয়েছে। তবে বন্যার্তদের জন্য এখনো কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। সেই কারণে বন্যা কবলিত এলাকাম মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
পানি বৃদ্ধি সম্পর্কে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে নুনখাওয়া পয়েন্টে দুধকুমারের পানি।