রাজশাহীতে জামায়াতকর্মীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানাধীন নওদাপাড়া বাইপাসে পড়ে আছে জামায়াতকর্মী শহিদুল ইসলামের লাশ। আজ সোমবার সকালে লাশ দেখে স্বজনদের আহাজারি। ইনসেটে শহিদুল ইসলাম। ছবি : এনটিভি

রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানাধীন নওদাপাড়া বাইপাস থেকে শহিদুল ইসলাম নামের এক জামায়াতকর্মীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত শহিদুল ইসলাম শাহ মখদুম থানাধীন ভাড়ালিপাড়া এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি নওদাপাড়ায় ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ড পদে কর্মরত ছিলেন।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবদুল্লাহ জোবায়েরের দাবি, শনিবার রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওই হাসপাতাল থেকে ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী ও বর্তমানে জামায়াতকর্মী শহিদুলকে আটক করে। আটকের পর আইনের মুখোমুখি না করে পুলিশ শহিদুলকে গুলি করে হত্যা করেছে।

তবে মহানগর ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে নওদাপাড়া বাইপাস এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পিচঢালা সড়কের ঠিক পাশে মাটির ওপর লম্বা হয়ে শুয়ে আছে এক যুবক। পরনে সবুজ টি-শার্ট ও সুরমা রঙের ট্রাউজার। কোমর-বরাবর একটি গামছা। বুকের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন। লাশ ঘিরে ছিলেন অনেক লোকজন। কয়েকজন স্বজন বারবার লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। একটু দূরে দাঁড়িয়েছিলেন পুলিশ ও আর্মড পুলিশের সদস্যরা।


এর আগে রোববার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক রায়হানুল পারভেজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমকর্মীদের ই-মেইলে পাঠানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে যৌথ বিবৃতি দেন ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরী সেক্রেটারি আবদুল্লাহ জোবায়ের ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শনিবার রাত ২টার দিকে ডিবি পুলিশ নওদাপাড়া ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁকে এখনো আদালতে হাজির করা হয়নি। অভিভাবকরা তাঁর অবস্থান জানতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে। এভাবে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের এমন অস্বীকার নানা আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে। অন্যায়ভাবে নিরপরাধ ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে অস্বীকার করা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের চরম লঙ্ঘন। আইনের রক্ষকদের এমন বেআইনি আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

শিবির নেতারা বলেন, ‘একটি বিশেষ গোষ্ঠীর ইশারায় এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে নিরপরাধ মেধাবী ছাত্রদের হত্যা করেছে, যা আমাদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সংগত কারণেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও তাঁর জীবন নিয়ে শঙ্কিত। অবিলম্বে আমরা গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলামের অবস্থান নিশ্চিত ও মুক্তি দিতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’

শিবিরের ওই বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ডিবির সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জানান, ছাত্রশিবিরের এই দাবি সঠিক নয়। ডিবি পুলিশ শনিবার রাতে শহিদুল ইসলাম নামের কাউকে নওদাপাড়া ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে আটক করেনি। আজ সোমবার এলাকাবাসী শাহ মখদুম থানায় ফোন করে জানায়, বাইপাসে অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে আছে। এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

ইফতে খায়ের জানান, শহিদুল ইসলাম কীভাবে মারা গেলেন, পুলিশ তা খতিয়ে দেখবে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল নগরীর শালবাগান এলাকায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীরের ওপর হামলার ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানায় করা পুলিশের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন নিহত জামায়াতকর্মী শহিদুল ইসলাম।