ঝিনাইদহে তোফাজ্জেল হোসেন হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামে গ্রাম্য মাতব্বর তোফাজ্জেল হোসেন হত্যা মামলার পুনর্বিচারে ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশসহ প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা আনাদায়ে আসামিদের আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলার অপর আট আসামিকে বেকসুর খালস প্রদান করা হয়েছে ।
আজ সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঘোড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা খেলাফৎ বিশ্বাস, বেলায়েত বিশ্বাস, কবির মিয়া, বশির উদ্দিন, ইউনুচ বিশ্বাস ও আবদুল আজিজ। এদের মধ্যে খেলাফৎ বিশ্বাস ঘোড়ামারা গ্রামের স্থানীয় বিএনপি নেতা। এ মামলার অপর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালের ৭ জুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা তোফাজ্জেল হোসেনসহ কয়েকজনকে মারপিট করে। এ ঘটনায় আহত হয় তারা। হাসপাতালে আনার পথে তোফাজ্জেল মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই ঘোড়ামারা গ্রামের মতলেব ঝিনাইদহ থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে বিচার শুরু হয়।
মামলার বিবরণে আরো বলা হয়েছে, ১৯৯৩ সালের ২৩ জানুয়ারি ওই আদালতের তৎকালীন বিচারক মাহবুবুর রহমান এক রায়ে ১৪ আসামির সবাইকে বেকসুর খালাস দেন। একই বছর বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা করে। ২০০৭ সালে উচ্চ আদালত ওই মামলার শুনানি শেষে এক রায়ে মামলাটি পুনরায় বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর আসামি পক্ষ লিভ টু আপিল দায়ের করে। ২০০৯ সালে লিভ টু আপিলের রায়ে হাইকোর্টের পুনরায় বিচারের জন্য দেওয়া আদেশ সঠিক মর্মে উল্লেখ করে মামলাটি নিম্ন আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
অবশেষে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আজ সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সানা মো. মাহরুফ হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিদের স্বজনরা আদালত প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আদালত এলাকায় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।