কিশোরগঞ্জ শহরে সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জ শহরে গতকাল শুক্রবার রাতে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘর। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে গতকাল শুক্রবার রাতে তাণ্ডব চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। তারা বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাড়িসহ ৫০টি স্থানে ভাঙচুর চালায়। 

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে অর্ধশতাধিক তরুণ হকিস্টিক, রামদা, লাঠি প্রভৃতি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেলা শহরের চর শোলাকিয়া এলাকায় অতর্কিত হামলা করে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা ওই এলাকার ১৫টি বসতবাড়ি ও তিনটি দোকান নির্বিচারে ভাঙচুর করে। এ সময় মালামাল ভাঙচুরের পাশাপাশি সন্ত্রাসীরা টাকা লুট করে বলে অভিযোগ করেছেন দোকানমালিকরা।

এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা মদন গোবিন্দ দাস বলেন, ‘রাতে হঠাৎ করে একদল সশস্ত্র তরুণ আমার বাসাসহ আশপাশের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ভাঙচুর করে। এ ধরনের নারকীয় ঘটনা আমি জীবনে দেখিনি।’

ক্ষতিগ্রস্ত হাজি স্টোরের মালিক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘হামলাকারীরা আমার দোকান ভাঙচুর করে ক্যাশ থেকে ২০ হাজার টাকা লুটে নিয়ে যায়।’ তিনি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। একই অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী ননী নাথ ভৌমিক।

হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সালমান গালিব, বোরহান সাদেক, তকিউল্লাহ, সাদেক ও শাহাব উদ্দিন নামের পাঁচ বাসিন্দা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন এশার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে ফেরার পথে হামলার শিকার হন। তাঁদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল অতিক্রমের সময় কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপককে (জিএম) বহনকারী গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে হামলাকারীদের তাণ্ডব চলাকালে পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক  সৃষ্টি হয়।

সেখান থেকে  হামলাকারীরা বাণিজ্যিক এলাকা পুরান থানার বিশ্বাস হেয়ার কাটিং সেলুন, মায়া বেকারি ও একটি মোটরসাইকেল সার্ভিসিংয়ের দোকান ও নরসুন্দা নদীর দক্ষিণপাড়ে বড় বাজারে হামলা চালায়। এতে ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মধ্যে ভুলু হাজির মুদি দোকান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

মায়া বেকারির মালিক নয়ন বসাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্রে নির্বিচার হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন ও হতভম্ব হয়ে পড়েছে। 

বড় বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের দোকানপাটে নজিরবিহীন হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।’

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, হামলায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এরা হলো কাজল (২০), পিয়াল (১৮), আমিন (১৮) জুয়েল (১৯), মোবারক (১৮), নিজাম (১৮) ও ছানা (১৭)। হামলার কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। সাতজনকে আজ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত আগামীকাল রোববার তাদের জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।