বন্যায় সিরাজগঞ্জের পৌনে ৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

Looks like you've blocked notifications!

এবারের বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলার ছয় উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নের প্রায় পৌনে ছয় লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই সপ্তাহ ধরে থাকা বন্যার কারণে এসব পরিবারের ঘরবাড়ি, জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।

এ ছাড়া তিন শতাধিক কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক ও পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, বানভাসি পরিবারগুলোর মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার সাতটি, কাজীপুরের ১০টি, বেলকুচির ছয়টি, চৌহালীর সাতটি. উল্লাপাড়ার সাতটি ও শাহজাদপুরের ১০টি ইউনিয়নের মোট ৫২৪টি গ্রামের এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৭টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৩০টি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৮২৯টি।

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৯টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৮৭টি। কাঁচা-পাকা রাস্তা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১২ কিলোমিটার এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২৭ কিলোমিটার।

অন্যদিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলায় ১৫ হাজার ছয় হেক্টর কৃষিজমির আমন ধান, আউশ ধান, পাট, কলা, ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান নষ্ট হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বন্যায় পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮১ জন মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ওয়ালী উদ্দিন জানান, বানভাসি মানুষের মধ্যে ৭৯০ টন চাল ও ৩৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ৪১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ওঠায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এসব বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর এসব প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে চালু হয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে পরীক্ষা নিতেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ওমর আলী শেখ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কৃষকদের পুনর্বাসনে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অবকাঠামো, রাস্তাঘাট মেরামত করা হবে।