নওগাঁয় গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!

নওগাঁর মান্দা উপজেলার ছোটমুল্লুক গ্রামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

ওই গৃহবধূর নাম গোলাপি রানী সাহা (১৯)। তিনি ছোটমুল্লুক গ্রামের দুলাল চন্দ্র সাহার স্ত্রী। তাঁর পৈতৃক বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার জারুল্যাপুর (ধাউড়িয়া দান্দপুর) গ্রামে। বাবার নাম দীনেশ চন্দ্র মণ্ডল।

গোলাপির মৃত্যুর পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন স্বামী দুলাল চন্দ্র সাহা।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ফাল্গুনে ছোটমুল্লুক গ্রামের ননী গোপাল সাহার (সম্ভু) ছেলে দুলাল সাহার সঙ্গে গোলাপি রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রতিবেশী কারো সঙ্গে গোলাপিকে মেশার সুযোগ দিতেন না শ্বশুর ননী গোপাল ও শাশুড়ি বুলু রানী সাহা।

গতকাল দুপুর ১টার দিকে গোলাপির চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যান। ওই সময় তাঁরা তাঁর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ অবস্থায় তাঁকে ভটভটিতে করে সাবাইহাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। 

গোলাপির শ্বশুর ননী গোপাল ও শাশুড়ি বুলু রানী দাবি করেন, দুপুরের খাবার রান্না করে পুত্রবধূ সোহাগী দোতলায় যান। দীর্ঘ সময় পরও ফিরে না এলে তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে ঘরে গিয়ে দেখেন, টিনের তীরের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে গোলাপি ঝুলে রয়েছে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী দুলাল সাহা তাঁকে সেখান থেকে নামিয়ে সাবাইহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

ননী গোপাল ও বুলু রানী যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ওই গৃহবধূর চাচাতো ভাই দ্বিজেন চন্দ্র মণ্ডল জানান, বিয়ের সময় বরপক্ষের সব দাবি পূরণ করা হলেও পালসার মোটরসাইকেল দিতে পারেননি তাঁরা। ভগ্নিপতিকে কিস্তিতে সেটি কিনে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি।

দ্বিজেন চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, তাঁর বোন গোলাপি রানীর নামে কবলাকৃত ২২ কাঠা জমি রয়েছে। এ ছাড়া বাবার রয়েছে আরো ছয়-সাত বিঘা ধানি সম্পত্তি। এসব সম্পত্তি বিক্রির জন্য বোনকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। তিনি আরো অভিযোগ করেন, যৌতুকের দাবি পূরণ না করায় গোলাপিকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।