গ্যাস ট্যাংক বিস্ফোরণ

অ্যামোনিয়ায় মরছে গাছ, ভেসে উঠছে মাছ

Looks like you've blocked notifications!
চট্টগ্রামে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কারখানার অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে মরে গেছে গাছ। ভেসে উঠেছে পুকুরের মাছ। ছবি : এনটিভি

চট্টগ্রামে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কারখানায় গ্যাস ট্যাংক বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে পুরো এলাকায় বড় ধরনের পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। 

গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে ৫০০ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সার কারখানার ডিএপি-১ ইউনিটের একটি গ্যাস ট্যাংক ছিদ্র হয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ফলে অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় চট্টগ্রামের বেশ কিছু এলাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।

আজ মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বিরাটাকায় গ্যাস ট্যাংকটি বিস্ফোরিত হয়ে মাটিতে পড়ে আছে। আশপাশের পাইপগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে।

অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে ট্যাঙ্কের পাশে যাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। 

ট্যাংকের আশপাশে বিশাল এলাকাজুড়ে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ট্যাঙ্কের কাছে অবস্থিত সব ছোট-মাঝারি গাছপালা মারা গেছে। এসব গাছের সবুজ পাতা কালো হয়ে কুঁকড়ে গেছে। এক রাতেই মরে গেলে ফুলগাছের ফুল।

শুধু তাই নয়, কারখানার পাশের জলাশয়ের সব মাছ মরে ভেসে উঠছে। ব্যাপক এই ক্ষতিতে বিলাপ করছেন স্থানীয় মাছচাষিরা। পাশের নদীর পানি রংও বিবর্ণ হয়ে উঠেছে।

সার তৈরির উপাদান অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ পালিত। এনটিভিকে তিনি বলেন, অবশ্যই এই ঘটনা মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়। মানুষ ও কারখানার আশপাশের প্রাণীদের জন্য এটা মারাত্মক ক্ষতিকর বিষয়। অতিরিক্ত সার দিলে গাছ যেখানে পুড়ে যায় দেখা গেল কারখানার আশপাশের গাছপালাও সেভাবে পুড়ে গেছে। পুকুরের পানির রং বদলে গেছে, পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে গেছে। অতিরিক্ত শ্যাওলা সৃষ্টি হওয়ায় মাছ শ্বাস নিতে পারবে না। ধীরে ধীরে আরো অনেক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে বলেও জানান এই বিশেষজ্ঞ। 

তবে এ পরিবেশ বিপর্যয়ে এলাকাবাসীর পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) চেয়ারম্যান মো. ইকবাল ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।

মাছ চাষিদের ক্ষতির প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, সরকারের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে এ প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হবে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিরা যেন ক্ষতিপূরণ পায় সে চেষ্টাও করা হবে।

বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. ইকবাল জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের রসায়নবিদরা সব সময় আশপাশের এলাকার বাতাস ও পানির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। অপরিশোধিত কোনো পানি নদীতে বা সাগরে ফেলা হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।