নওগাঁয় বিদ্যালয়ের টাকা লোপাটের অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!

বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য সরকারিভাবে কিছু টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নওগাঁর মান্দায় সরকারিভাবে বরাদ্দ বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার (স্লিপ) এই টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।

মান্দার বিলকরিল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্লিপ কমিটি নামমাত্র কাজ ও ব্যাংকে সমন্বয় ভাউচার দাখিল করে সিংহ ভাগ অর্থই আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু এই বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধেই নয়, উপজেলার আরো কয়েকটি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে আলাদা কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, এ বছরের এপ্রিল মাসে উপজেলার ১৭৭টি বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটির অনুকূলে বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য ৪০ হাজার ও শিশু শ্রেণি সজ্জিত করণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। সোনালী ব্যাংক মান্দা শাখায় যৌথ স্বাক্ষরিত হিসাব নম্বরে আলাদা আলাদা চেক দেওয়া হয় প্রত্যেকটি বিদ্যালয়কে।

প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই দাখিল করা উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ৩০ জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে সমন্বয় ভাউচার দাখিল করেছে।

তবে উপজেলার বিলকরিল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাপ্ত অর্থের বিপরীতে ব্যয়ের ২৩টি খাত দেখিয়ে একটি পরিকল্পনা উপজেলা শিক্ষা অফিসে দাখিল ও অনুমোদন করিয়ে নেয়। দাখিল করা পরিকল্পনায় ১১ নম্বরে চেয়ার-টেবিল মেরামত দেখিয়ে দুই হাজার ও ১৮ নম্বরে আসবাবপত্র মেরামত দেখিয়ে আরো দুই হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। স্লিপ গাইড লাইনে মাটি ভরাটের কোনো উল্লেখ না থাকলেও এ খাতে ব্যয় করা হয়েছে দুই হাজার টাকা। পাঁচ হাজার টাকায় দুটি মাদুর ও কয়েকটি ওয়ালম্যাট দিয়ে শিশু শ্রেণি সজ্জিতকরণ করা হয়েছে।

এসব দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে তালিকা মোতাবেক পুরো কাজ বাস্তবায়ন করেনি বিলকরিল্যা বিদ্যালয়। গত সপ্তাহে বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তাঁর কাছেই এসব অনিয়ম ধরে পড়ে। প্রধান শিক্ষককে কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেগুলো তদন্তের জন্য আলাদা কমিটি গঠনের বিষয়টিও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে বিদ্যালয়গুলো নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে, বিলকরিল্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিন সুলতানা বরাদ্দকৃত টাকায় পরিকল্পনা অনুয়ায়ী কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেন।

কী কী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে জানতে চাইলে স্লিপ কমিটির সদস্য সহকারী শিক্ষক মকলেছুর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দিতে প্রধান শিক্ষককে বাধা দেন। এ সময় মকলেছুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেন। স্লিপ কাজের যাবতীয় কাগজপত্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেন তিনি। এ বিষয়ে কোনো প্রকার তথ্য দিতেও অস্বীকার করেন এই শিক্ষক।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, তদন্তে অনিয়ম ধরা পড়লে ওই বিদ্যালয়ের স্লিপ কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের তথ্য না দিয়ে দুর্ব্যবহার করার কারণে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।