সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ মধ্যবর্তী নির্বাচন : অলি আহমদ

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, দেশে আজ সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাধীনতার পর এত ভয়াবহ সংকটে জাতি কখনো নিপতিত হয়নি। বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে একটি নিরপেক্ষ, মধ্যবর্তী জাতীয় নির্বাচন।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে দলীয় মিলনায়তনে এলডিপি ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্নেল অলি আহমেদ এসব কথা বলেন। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এলডিপি উত্তরের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি তমিজউদ্দিন টিটু, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমানসহ উত্তরের বিভিন্ন থানার প্রতিনিধিরা।
সাবেক মন্ত্রী অলি আহমদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পদদলিত করেছে। প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে মুখে ফেনা তুললেও একদলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কপালে কালিমা লেপন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের গণবিরোধী অবস্থান, ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার অপরাজনীতি বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ বয়ে আনছে। এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজ দেশে শুধু রাজনৈতিক সংকট নয়, দেশের অস্তিত্ব সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে সরকার শুধু ভারতের ঋণ পরিশোধে ব্যস্ত। গত ৪৫ বছর শুধু আমরা দিয়েই যাচ্ছি। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে তারা শুধু নিয়েই যাচ্ছে। আমার নৈতিক পাওনাও দিচ্ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সহযোগিতার কারণে ভারতকে আর কত দিতে হবে? আর কত দিলে তাদের ঋণ শোধ হবে। যে স্বাধীনতা আমাদের কথা বলতে দেয় না, মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে দেয় না, সেই স্বাধীনতা আগামী প্রজন্মের জন্য অহংকারের নাও হতে পারে।’
শফিউল আলম প্রধান বলেছেন, ‘রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না। বহুদলীয় গণতন্ত্রের জন্যই স্বাধীনতার সংগ্রাম। সুতরাং স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই।’
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, ‘অপশক্তির মদদে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে অধিষ্ঠিত সরকারের কাছে জাতি গণতন্ত্র আর আইনের শাসন প্রত্যাশা করে না। গণজাগরণ অথবা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই চলমান অচল অবস্থা থেকে দেশকে মুক্তি দেওয়ার কোনো বিকল্প পথ খোলা নাই।’
সভায় ইঞ্জিনিয়ার মো. ইকবাল হোসেন তালুকদারকে আহ্বায়ক, রেজাউল উল্লা লাবু, মো. আবদুস সাত্তার, সাইফুল ইসলাম পাভেলকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও খাজা আতিকুর রহমান মানিককে সদস্য সচিব করে এলডিপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।