ভূমিকম্প : বাংলাদেশে সচল আট চ্যুতি

Looks like you've blocked notifications!
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘আর্থকোয়াক রিস্ক ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ছবি : সংগৃহীত

বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশে আটটি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে বলে একটি গবেষণার বরাতে জানানো হয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি রোধে ঝুঁকিমুক্ত স্থাপনা নির্মাণের পাশাপাশি নেপালের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর তাগিদও দেওয়া হয়।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে  আয়োজিত ‘আর্থকোয়াক রিস্ক ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব বিষয় তুলে ধরেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইইবি-চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন বলেন, বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা তো রয়েছেই, সেই সাথে বাংলাদেশকে ছয় শ কোটি ডলারের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
 
‘বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-মিয়ানমার ও বাংলাদেশ অংশের ভূতাত্ত্বিক প্লেটটি এখনো সক্রিয় এবং তা ক্রমে অগ্রসর হচ্ছে। বুয়েটের গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে আটটি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, রাজশাহীর তানোর, কুমিল্লা, চট্টগ্রামের ডুবরী, সীতাকুণ্ড, সিলেটের শাহজীবাজার ও রাঙামাটির বরকল।’ 

প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন আরো জানান, বিশ্বব্যাংক ও ইউএনডিপির সহায়তায় বুয়েটের গত বছরের গবেষণায়ও বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকির কথা উল্লেখ রয়েছে। তাই ভূমিকম্প রোধে উদ্যোগে ধীরগতির পরিহার করে এখনই গড়ে তোলা প্রয়োজন সমন্বিত পরিকল্পনা।

মূল প্রবন্ধে প্রকৌশলী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভূমিকম্প কখনো মানুষ মারে না, মানুষ মারে অপরিকল্পিত নির্মাণ। বাংলাদেশ হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মেগা শপিং মল। আমরা সব সময় ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। তবে আমরা যেটি করতে পারি সেটি হলো, ঝুঁকি কমিয়ে দেওয়া। এ জন্য সচেতন হতে হবে। স্থাপনা নির্মাণে অধিক সচেতন হতে হবে।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরো বলেন, আমরা সম্প্রতি নেপালের ভূমিকম্প দেখেছি। সেখানে দিনের বেলায় ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু স্কুলগুলোর কোনো ক্ষতি হয়নি।কারণ স্কুলগুলো শতভাগ ভূমিকম্পের ঝুঁকিমুক্ত করে গড়ে তোলা হয়েছে। এ জন্য স্কুলের বাচ্চারা তেমন মারা যায়নি। আমাদের এখানে দিনের বেলায় ভূমিকম্প হলে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে মারা যেতে পারে। এ জন্য স্কুলগুলোকে আমরা ঝুঁকিমুক্ত করে তুলতে পারি। কেবল যেখানে ব্যাঘাত ঘটিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেখানেই বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সুন্দর সুদৃশ্য শহর ভেঙে গেছে। আমাদের দেশও নেপালের থেকে খুব দূরে নয়। নেপাল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।
 
আইইবি-চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মানজারে খুরশীদ আলম সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে চুয়েটের উপ-উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলমসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।