জামিন পেলেন গয়েশ্বর ও শমসের মবিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। আজ বুধবার বিচারপতি মো. রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁদের জামিন আদেশ দেন।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলায় আদালত শমসের মবিন চৌধুরীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে একই সাথে তাঁকে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। জামিন পাওয়ায় তাঁর মুক্তি পেতে আর কোনো বাধা নেই বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরীর আইনজীবী মাসুদ রানা।urgentPhoto
অন্যদিকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রাজধানীর তুরাগ থানায় করা নাশকতার মামলায় আজ জামিন পেলেও শাহবাগ থানার একটি মামলায় জারি করা এক রুল নিষ্পত্তি না হওয়ায় এবং পল্টন থানার আরেকটি মামলা শুনানির অপেক্ষায় থাকায় এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্রের পক্ষে আজ আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী ও ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান।
এ বিষয়ে নিতাই রায় চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় মামলা করা হয়। এ মামলায় আজ তাঁকে জামিন দিয়েছেন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলার মধ্যে শাহবাগ থানার মামলায় কেন জামিন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। এটি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। পল্টন থানার আরেকটি মামলা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।’
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছর ২৬ ডিসেম্বর হরতাল-অবরোধের সময় নাশকতা করার জন্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তুরাগ নদের পাশে একটি ওয়ার্কশপে এক হাজার পিস লোহার কাঁটা তৈরির জন্য অর্ডার দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি এক হাজার টাকা অগ্রিমও দিয়েছিলেন ওয়ার্কশপের মালিককে। এ ঘটনায় গত বছর ২৬ ডিসেম্বর পুলিশ বাদী হয়ে গয়েশ্বরের বিরুদ্ধে তুরাগ থানায় একটি মামলা করে। এরপর ওই দিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কারাগারেই আছেন।
মামলার শুনানিতে গয়েশ্বরের আইনজীবী নিতাই রায় আদালতকে বলেন, ‘তিনি (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) দেশের প্রথম সারির নাগরিক এবং সাবেক মন্ত্রী। তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
এদিকে শমসের মবিন চৌধুরীর পক্ষে মামলায় শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুল রহমান খান।
শুনানিতে শমসের মবিনের আইনজীবী মাসুদ রানা আদালতকে বলেন, ‘দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো এফআইআরে নাম নেই। সন্দেহজনকভাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একজন প্রথম শ্রেণির নাগরিক ও সম্মানিত নাগরিক। দেশ-বিদেশে তাঁর অনেক সুনাম রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সেই জন্য তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।’
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুল রহমান খান জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তাঁকে জামিন দেন। এই মামলায় জামিন পাওয়ায় তাঁর মুক্তি পেতে আর কোনো বাধা নেই বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরীর আইনজীবী মাসুদ রানা।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছর ২৪ ডিসেম্বর আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন আদালতে দুদকের মামলায় হাজিরা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ফেরার পথে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিনই পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে শাহবাগ থানা ও চকবাজার থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। এসব মামলায় সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গত ৮ জানুয়ারি গুলশান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পথে শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।