এমন ঘটনা বিশ্ব বেশি দিন অগ্রাহ্য করতে পারবে না

বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক পক্ষের উচিত, সহিংসতার চক্র ভাঙতে সহযোগিতা করা। একই সঙ্গে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার হওয়া দরকার। গতকাল শুক্রবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান সংগঠনের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ে সহিংসতা ও অন্যান্য নিপীড়নের ঘটনা বন্ধ হয়নি। এ অবস্থায় সরকারের উচিত, সবার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে যাচ্ছেতাই পেশিশক্তি প্রয়োগ, গুম কিংবা গ্রেপ্তার বন্ধ করা।
ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে সহিংসতায় প্রায় ৬০ জন লোক নিহত হয়। আহত হয় শত শত লোক। দেশজুড়ে গ্রেপ্তার হয়েছে কয়েক হাজারের বেশি লোক। এমন পরিস্থিতিতে সব রাজনৈতিক দলের উচিত, তাদের সমর্থকদের বেআইনি সহিংসতা বন্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া।
‘অপরাধের প্রাণঘাতী চক্র বন্ধ কর’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, পেট্রলবোমা হামলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অপব্যবহারের কারণে হাসপাতালগুলো ভরে উঠেছে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, বিরোধী দলের কিছু লোকের সহিংস অপরাধের জবাবে সরকার হত্যা, আহত করা কিংবা অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করতে পারে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ২০১৫ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে সহিংসতা ও নির্বিচারে বিরোধীদের দমন শুরু করে। ২০১৪ সালে বিতর্কিত নির্বাচনের বর্ষপূর্তির সময় বিক্ষোভ শুরু হয়। বিরোধীদের বয়কট করা ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল।
সংগঠনটির দাবি, সরকার যাচ্ছেতাই গ্রেপ্তার, হত্যা এবং লোকজনকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে সহিংস অবস্থা বজায় রাখার কৌশল নিচ্ছে। আগুন দিয়ে প্রাণঘাতী হামলার পাশাপাশি বিরোধী পক্ষের সহিংসতার বর্তমান চক্র হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক বছর আগের নথিভুক্ত সহিংস ঘটনার সঙ্গে মিল রেখেই হচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতায় ৫০০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছিল।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ কিছু দেশ সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ভারতের উচিত সহিংসতা বন্ধে নতুন করে আহ্বান জানানো, তাদের মতামত বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো গণ্য করে।’
অ্যাডামস বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন ঘটনা বিশ্ব বেশি দিন অগ্রাহ্য করতে পারবে না। রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত হবে যে রক্তপাত বন্ধ না হলে, অন্য দেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়বে।’