‘স্থায়ী সমাধানের প্রস্তাব দিলে সরকার আলোচনায় রাজি’

Looks like you've blocked notifications!
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ফাইল ছবি

‌‘বেগম জিয়া ও ২০ দল নাশকতা বন্ধ করে দেশের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে স্থায়ী সমাধানের কোনো প্রস্তাব দিলে সরকার আলোচনায় রাজি হবে। তবে তার আগে শর্ত হলো, বেগম জিয়াকে নাশকতা ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। মনে রাখবেন, দানবের সঙ্গে মানবের কোনো সংলাপ হয় না।’

আজ রোববার তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংলাপ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। দুপুর ১২টার দিকে সম্মেলনটি শুরু হয়ে ১টায় শেষ হয়। এ সময় তথ্য মন্ত্রণালয় ও তথ্য অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সুশীলসমাজ, বুদ্ধিজীবী ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহল সংলাপ ও সমঝোতার কথা বলছে। কিন্তু তাঁরা কেউই স্থায়ী সমাধানের কোনো প্রস্তাব দিচ্ছেন না। তাঁরা কি অ্যাডহক ভিত্তিতে (অস্থায়ী ভিত্তিতে) সমাধান চান, নাকি স্থায়ী সমাধান চান, তা পরিষ্কার করে বলছেন না। 

সম্প্রতি হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেন খালেদা জিয়া। এসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপি ও জোটের নেতা-কর্মীরা জড়িত নন বলেও দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা সরকারের অবস্থান জানতে চান তথ্যমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমান নাশকতায় যদি জড়িত না হন, তাহলে এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছেন না কেন? 

তথ্যমন্ত্রী জানান, নাশকতায় হতাহত ব্যক্তিদের নিয়ে খালেদা জিয়ার ওই বিবৃতি এবং বুদ্ধিজীবী ও সুশীলসমাজের সংলাপের আহ্বানের জবাব দিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে তিনি বলেন, আলোচনার জন্য খালেদা জিয়া সুর্নিদিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেননি। তিনি গত ৫ জানুয়ারির আগে যে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেটা নিয়ে আলোচনার সুযোগ না দিয়েই আন্দোলনে নেমে পড়েন। 

জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক সমাবেশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে ইনু বলেন, সরকার রাজনীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সহিংসতা, নাশকতা ও অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সংবিধানের বাইরে আলোচনা নয়
বিরোধী দল যদি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে তাহলে সরকার আলোচনায় প্রস্তুত কি না-এমন এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সংবিধানের আওতায় সরকার আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে কোনো অবস্থায় অসাংবিধানিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে না। কেননা যদি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা মেনে নিতে হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রে আলোচনা ব্যাহত হবে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালত একটি নির্দেশনায় বলেছেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলেও এতে বিচার বিভাগকে যাতে টেনে না আনা হয়। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হলেও এটা কাদের নিয়ে হবে, কয় মেয়াদে হবে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব খালেদা জিয়া দেননি। গত বছরের ৫ জানুয়ারির আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে রূপরেখা দিয়েছিলেন, সেটিও টিকে নাই।’

২০-দলীয় জোটের আন্দোলনের এজেন্ডা নির্বাচন নয় উল্লেখ করে ইনু বলেন, নির্বাচন বানচাল করে অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি, দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেওয়া এবং অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠাই তাদের এজেন্ডা। আগুন-সন্ত্রাসীদের পরাজিত ও আত্মসমর্পণে বাধ্য করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।