গণধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টের রুল

Looks like you've blocked notifications!
ফাইল ছবি

রাজধানীর কুড়িলে এক গারো নারীকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা-ও জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। 

একই সঙ্গে ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ, সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো এবং পরীক্ষা করতে বিলম্ব করাকে কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, অবহেলার জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না রুলে তা জানতে চেয়েছেন আদালত। 

জনস্বার্থে পাঁচটি মানবাধিকার সংগঠনের দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই রুল জারি করেন। 

আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, উত্তরা, খিলক্ষেত, গুলশান ও ভাটারা থানার ওসিকে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

এ ছাড়া সারা দেশে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ ও জন্ম পরিচয় নির্বিশেষে বৈষম্যমহীনভাবে সবার সেবা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি ও পুলিশ কমিশনারকে একটি সার্কুলার জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

যৌন হয়রানি ও যৌন সহিংসতা রোধে বিদ্যমান আইন ও প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করার জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, আইনজীবী ও নারী অধিকারকর্মীদের নিয়ে একটি কমিটি করতে রিটকারীদের কাছে নামের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩১ মের মধ্যে এই তালিকা আদালতে জমা দিতে রিটকারী পাঁচটি সংগঠনকে বলা হয়েছে।  

নারীপক্ষ, মহিলা পরিষদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আইন ও শালিস কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) গতকাল রোববার এই রিট আবেদন করলে সোমবার তার ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেড আই খান পান্না ও মেহবুবা জুঁই। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নুসরাত জাহান।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, জনস্বার্থে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পুলিশের অবহেলার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। সারা দেশে সব মানুষের সমানভাবে সেবা নিশ্চিত করতে একটি সার্কুলার জারি করতে বলেছেন। 

প্রসঙ্গত, গত ২১ মে রাত ১০টার দিকে কাজ শেষে ওই তরুণী যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে উত্তরায় বাসায় ফিরতে বাসের জন্য একটি সিএনজি স্টেশনের কাছে অপেক্ষা করছিলেন। ওই সময় একটি মাইক্রোবাস তার সামনে এসে থামে।

মাইক্রোবাস থেকে দুই যুবক নেমে এসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখ চেপে ধরে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। গাড়িতে তুলেই তাঁর মুখ ও হাত-পা বেধেঁ ফেলে। এরপর গাড়িটি বিভিন্ন সড়কে ঘুরতে থাকে। গাড়ির ভেতরে পাঁচজন পর্যায়ক্রমে তাঁকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময়ও তাঁকে ধারালো অস্ত্রের মুখে ঠেকিয়ে রাখা হয়। মধ্যরাতে  উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসটি পালিয়ে যায়।