বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি আর কারাগারের মধ্যে পার্থক্য নেই : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আজ শনিবার যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য কারাগার আর বাড়ির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটা সন্ত্রাস আর গুণ্ডামির সংগঠন।

দশ দফা দাবিতে আজ শনিবার (২৭ মে) বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য কারাগার আর বাড়ির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বাড়িতে থাকলেও সার্বক্ষণিক নজরদারীর মধ্যে থাকতে হচ্ছে। বাইরে বের হলেও মনে হচ্ছে বৃহৎ করাগারের মধ্যে আছি।’

সমাবেশের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সমালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনারা এদেশেরই মানুষ। কিন্তু, আপনারা একটি দলের তল্পিবাহক হিসেবে কাজ করছেন, আমরা কিন্তু ভুলে যাচ্ছি না।’

রুহুল কবীর রিজভী নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বলেন, ‘সবকিছুর দাম বাড়ছে আলোর গতিতে। বাংলাদেশের চিনি এখন বিদেশিনী। দেশের মানুষ আধপেটা খেয়ে খর্বাকায় বামন হচ্ছে। আর তিনি কাতার, আমেরিকা, লন্ডনে গিয়ে উন্নয়ন, পদ্মা সেতু আর উড়াল সড়কের গল্প শোনাচ্ছেন।’

অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবি করে জানান রিজভী। বলেন, ‘৪৫ বছর আগে বিচারপতি কে এম হাসান বিএনপির কোন কমিটির কোন সম্পাদকীয় পোস্টে ছিলেন, সে কারণে যদি তার অধীনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে থাকা আপনার অধীনে কীভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে?’ তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য তো আপনারাই আন্দোলন করেছিলেন। সংবিধান তো ভারী পাথর নয়, যে সংশোধন করা যাবে না। বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক মহল, সবাই বলছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা। অথচ তারা জোর করেই ক্ষমতায় থাকতে চায়।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘তারা এখন অনেক টাকার মালিক। কানাডায় বেগমপাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করেছেন। সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক লুটপাট করেছেন। কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন।’

রুহুল কবীর রিজভী আরও বলেন, ‘আমেরিকা বাংলাদেশের জন্য করা ভিসা নীতি ৩ তারিখেই সরকারকে জানিয়েছে। অথচ আমরা জানতে পারলাম পরশু দিন। এতোদিন কেন লুকিয়ে রেখেছিলেন?’

রিজভী বলেন, ‘তিনি গোস্বা করে বলেছিলেন, আমেরিকা আমাকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। যারা স্যাংশন দেয়, তাদের কাছ থেকে কিছু কিনব না। একদিন পরই চিনি আমদানির চুক্তি করলেন। লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিককে বেকার করার ঝুঁকি নিয়েও আপনারা ক্ষমতায় থাকতে চান। এ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ওপর চেপে রয়েছে।’ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুসহ উপজেলা ও জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।