ভারতীয় ট্রাকচালকদের মারামারি

হিলিতে আধাবেলা পর আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক

Looks like you've blocked notifications!
হিলি চেকপোস্টের জিরো পয়েন্টে বৈঠক করছে দুই দেশের ব্যবসায়ী, ট্রাকচালকসহ স্থানীয় প্রশাসন। ছবি : এনটিভি

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ভারতীয় ট্রাকচালকদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন চালক আহত হন। গতকাল বুধবার (১৪ জুন) রাত ১১টার দিকে বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আধাবেলা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে দুই দেশের ব্যবসায়ী, ট্রাকচালক ও পুলিশের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সুরাহা হলে দুপুর ২টা থেকে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক হয়।

হিলি স্থলবন্দরের বেসরকারী অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক জানান, গতকাল বুধবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যবাহী শতাধিক ভারতীয় ট্রাক পানামা পোর্টে প্রবেশ করে। এ সময় কিছু পণ্যবাহী ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করা হলেও অন্য ট্রাকগুলো পণ্য খালাসের অপেক্ষায় অবস্থান করছিল। রাত ১১টার দিকে ভারতের হিলির ট্রাকচালকরা মদ খেয়ে কোনো কারণ ছাড়াই উত্তর প্রদেশের ট্রাকচালকদের উপর চড়াও হন। এ সময় উত্তর প্রদেশের চালকরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উত্তর প্রদেশের চালক খুরশিদের হাত কেটে এবং মাথা ফেটে যায় এবং আনাস অজ্ঞান হয়ে যান। খবর পেয়ে পানামা পোর্টের নিরাপত্তাকর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা না পারায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আহত দুই ট্রাকচালককে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়।

উত্তর প্রদেশের ট্রাকচালক আহত খুরশীদ। ছবি : এনটিভি

উত্তর প্রদেশের ট্রাকচালক খুরশীদ বলেন, ‘গতকাল বিকেলে ভারত থেকে পেঁয়াজ নিয়ে বাংলাদেশে আসি। এরপর পেঁয়াজ খালাসের জন্য বন্দরের পানামা পোর্টে অবস্থান করি। রাত ১১টার দিকে ভারতের কিছু ট্রাকচালক মদ খেয়ে মাতলামি করে আমাদের উপর চড়াও হন। আমরা বাধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। তারা আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছে। আমার মাথাও ফেটে গেছে। আরেক ট্রাকচালক আনাসকেও তারা আহত করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আমাদের উত্তর প্রদেশের চালকরা সকাল থেকে হিলি দিয়ে ভারত থেকে পণ্য পরিবহণ বন্ধ রাখে। দুপুরে বিচারের আশ্বাস দিলে আমরা ভারত থেকে পণ্য পরিবহণ শুরু করি।’

তবে এই অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে ভারতের হিলির ট্রাকচালক আপন ও বিনয় বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের চালকরা আমাদের সঙ্গে এমনিতেই তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সেখানে ধস্তাধস্তি হলে তারা নিজেরাই পড়ে গিয়ে আহত হন।’

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে উত্তর প্রদেশের চালকরা সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দরের গেটে অবস্থান নেন। এতে সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকে। বিষয়টি নিয়ে দুপুরে চেকপোস্টের জিরো পয়েন্টে দুই দেশের ব্যবসায়ী, পুলিশ, ট্রাকচালক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে উত্তর প্রদেশের ট্রাকচালকরা প্রতিবন্ধকতা তুলে নেন। এরপর দুপুর ২টা থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক হয়।