সৎ ভাইয়ের ছোড়া পেট্রল বোমায় পুড়ল নানি-নাতনির শরীর

Looks like you've blocked notifications!
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। ফাইল ছবি

গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্রীসহ তার নানিকে পেট্রলের আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে সৎ ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

আজ রোববার (১৮ জুন) দুপুরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে জেলার সদর উপজেলার বাঘেরবাজার শিরিরচালা মিনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন শিরিরচালা গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৩)। সে স্থানীয় হাজি নুরুল ইসলাম মডেল একাডেমির ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। অপরজন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার কাণ্ডপাশা গ্রামের ইউনুস তালুকদারের স্ত্রী বেবী বেগম (৫৫)। বেবী বেগমের মেয়ের ঘরের নাতনি সানজিদা আক্তার।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত সৎ ভাই নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার অর্জনচর গ্রামের সুলতান ফকিরের ছেলে শুভ মিয়া (২০)। তার সঙ্গী সাব্বিরের বাড়ি (২৬) ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায়। সানজিদা আক্তারের সৎ ভাই শুভ মিয়া।

ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

দগ্ধের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সানজিদার বাবা শফিকুল ইসলাম প্রথম স্ত্রী মারা গেলে মোছা. মনিরা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। মনিরার প্রথম পক্ষের ছেলে শুভ মিয়া কিছুদিন আগে একটি মেয়েকে নিয়ে শফিকুলের বাড়িতে ওঠেন। পরে সানজিদা এ ঘটনাটি তার বাবা শফিকুলকে বললে, তিনি শুভকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা বেগমও শফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে চলে যান। এ ঘটনার ১০ থেকে ১২ দিন পর তিনি তালাকনামা পাঠিয়ে দেন। এদিকে শফিকুল তার বাড়িতে সন্তানদের দেখাশোনার জন্য প্রথম পক্ষের শাশুড়ি বেবী বেগমকে নিয়ে আসেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই অভিযুক্ত বখাটে যুবক শুভ তাঁর সঙ্গী সাব্বিরকে নিয়ে আজ দুপুরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোটসাইকেলযোগে শাহজাহানের বাড়ির পশ্চিম পাশে কাঁঠাল বাগানের মধ্যে বোমা সদৃশ্য বস্তুতে পেট্রল মিশিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে সানজিদা ও বেবী বেগমের ওপর নিক্ষেপ করেন। এ সময় তারা দগ্ধ হয়।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, দগ্ধ দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীর ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে।’