ফরিদপুরে অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিচয় মিলেছে

Looks like you've blocked notifications!
ফরিদপুরের মানচিত্র

ফরিদপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আগুনে পুড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরপরই হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে মরদেহ ও আহতকে উদ্ধার করে। তাদের পরিচয় মিলেছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

এই দুর্ঘটনায় আহত ড্রাইভার মৃদুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।

আজ শনিবার (২৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ওই অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়। 

দুর্ঘটনায় নিহত সাতজন একই পরিবারের সদস্য। তাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলান নগর গ্রামে। তারা হলেন—উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলান নগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫), তার মেয়ে কমলা পারভিন (২৬), বিউটি বেগম (২৪), নাতি হাসিব (৮), হাফসা (২), আরিফ (১২) ও মেহেদি (১২)। এর মধ্যে কমলা পারভিন ঢাকায় বসবাস করতেন। ছোট মেয়ে বিউটি বেগম উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামের মাহমুদ ইসলাম রনির স্ত্রী। 

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলান নগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এক মাস আগে ঢাকায় এসে চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা পারভিনের বাসায় ছিলেন। আজ শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বোয়ালমারীর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। পথে দুর্ঘটনায় সাতজনই প্রাণ হারান।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ‘এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে শোকাহত পরিবারের বাড়িতে গিয়ে সদস্যদের সান্তনা দেওয়া হয়।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিপুল চন্দ্রকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের পরিবার প্রতি ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

মাদারীপুর হাইওয়ে এলাকার পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘মালিগ্রাম ফ্লাইওভার এলাকায় এসে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় অ্যাম্বুলেন্সের সামনে অংশটি ফ্লাইওভারের রেলিং এ গিয়ে আঘাত লাগে। এর ফলে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে ড্রাইভার ও সাতজন যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের সবাই মারা গেছেন। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’