জব্দ ছিল হেরোইন, পাওয়া গেল আচার!
র্যাব-৫ জব্দ করেছিল এক কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইন। আটক করেছিল মাসুম নামে একজনকে। পরে র্যাবের ডিএডি রাজিব বাহাদুর বাদি হয়ে মাদক আইনে নাটোর সদর থানায় করেছিলেন মামলা। ওই মামলায় মাসুম এখন কারাগারে। নেওয়া হয়েছে ১২ জনের সাক্ষী। আজ সেই মামলার যুক্তিতর্কের তারিখ ছিল। তার আগে নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শরীফ উদ্দিনকে করা আসামির অনুরোধে খোলা হয় সিলগালা আলামতের প্যাকেট। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, এ সময় ‘ওই প্যাকেট থেকে সাতটি প্যাকেট খুলে দেখা যায় সেগুলো আচারের প্যাকেট। কেউ কেউ বলছে লোকাল আচারের প্যাকেট, কেউ বলছে থাইল্যান্ডের আচারের প্যাকেট।’
এ ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আগামি ২৫ জুলাই সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক মো. শরীফ উদ্দিন।
পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নাটোর সদর উপজেলার একডালা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে মাসুম নামে এক যুবকের কাছ থেকে সাটি প্যাকেটে থাকা এক কেজি ২৯০ গ্রাম হেরোইন সদৃশ পাইডার জব্দ করে র্যাব সদস্যরা। আটক করেন মাসুমকে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হেরোইন উদ্ধার করে একটি এজহার দাখিল করে। সেই এজহার দাখিল পরবর্তী সময়ে তদন্ত হয়। তদন্তের পর সিএস (চাজশিট) হয়। ইতোমধ্যে মামলার ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এবং আজ আরগুমেন্টের ডেট (যুক্তিতর্কের দিন) ছিল। এর আগেই সৌভাগ্য বলি আর দুর্ভাগ্য বলি—মাননীয় জেলা জজ মহদয় গতকাল কারাগার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। পরিদর্শনের যাওয়ার পর আজকের আসামি মাসুম মাননীয় জেলা জজ মহোদয়কে অনুরোধ করেন—মাননীয় জেলা জজ মহোদয়, আপনি আমাকে সাজা দেন, সব করেন, আপত্তি নেই। কিন্তু আলামতগুলো ওখানে আছে, ওই আলামতগুলো যদি আপনি দেখেন তাহলে আমার জন্য একটু সুবিধা হয়। আপনি দয়া করে আলামতটা খুলে দেখেন।’
পিপি আরও বলেন, ‘আজ যখন আমরা আরগুমেন্টের জন্য উপস্থিত হই, ঠিক সেই সময় তিনি (জেলা দায়রা জজ) বলেন যে, আলামতগুলো খুলে দেখতে হবে, সেখানে কী আছে? সেই আলামত খুলে দেখা যায় যে, ১২৯০ গ্রাম গ্রাম হেরোইন, এই হেরোইনের সাতটি প্যাকেট বলা হয়েছে, সেই সাতটি প্যাকেট ঠিকই আছে, কিন্তু সাতটি প্যাকেট খুলে দেখা যাচ্ছে সেগুলো আচারের প্যাকেট। কেউ কেউ বলছে লোকাল আচারের প্যাকেট, কেউ বলছে থাইল্যান্ডের আচারের প্যাকেট। এগুলো সিলগালা করা ছিল।’
পিপি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই আলামতগুলো দেখার পর আমরা অবাক হয়ে যায় যে, এটা কীভাবে সম্ভব হলো?’
সিরাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আইও (তদন্ত কর্মকর্তা)সাহেব জানানো হয়েছে। তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আদালতে এসে এর ব্যাখ্যা দেবেন।