গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থীর লেকে ডুবে মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

আজ দুপুর ১টার দিকে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে আনার আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজী ইসমাইল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি  প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব,  কোষাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মোবারক হোসেন, সাবেক ভিসি  প্রফেসর ড. শাহজাহান, রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান,  প্রক্টর ও  শিক্ষক সমিতির সভাপতি  ড. কামরুজ্জামানসহ শিক্ষকরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ ঘটনায় বশেমুরবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুবাশ্বেরা হিয়া ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসফিয়া জাহান রিতু।

রিতুর বাড়ি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের মাছকাটা গ্রামে। আর হিয়া খুলনা শহরের বয়রা মধ্যপাড়া এলাকার এনজিও কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনিরের মেয়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজেদুর রহমান আকাশ বলেন, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘন বৃষ্টি শুরু হলে ওই দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকে গোসল করতে আসেন।  লেকপাড়ে পা পিছলে  সাঁতার না জানা শিক্ষার্থী হিয়া পানির মধ্যে পড়ে যান। অল্প সাঁতার জানা শিক্ষার্থী রিতু তাঁকে উদ্ধার করতে পানিতে ঝাঁপ দেন। পরে ওই দুজনই লেকের পানিতে ডুবে যাণ। এ সময় আমিও গিয়ে গভীর পানির জন্য তাদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হই। এরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে দুপুর ১টার দিকে ওই দুজনকে উদ্ধার করেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

হিয়া ও রিতুর সহপাঠীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘লেকপাড়ে অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লেকেরপাড়ে  প্রটেকশনের ব্যবস্থা রাখলে এই ধরনের ঘটনা ঘটত না। যাদের গাফিলতির কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ঘটনায় আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

বশেমুরবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় লেকে  শিক্ষার্থীদের গোসল করা নিষেধ।  তার পরও দুই শিক্ষার্থী বৃষ্টির মধ্যে গোসল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে মারা গেছে। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক। আমরা এ ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান বশেমুরবিপ্রবির ভিসি।