পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন

Looks like you've blocked notifications!
পি কে হালদার। ফোকাস বাংলার ফাইল ছবি

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। 

আজ বুধবার (২ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে এই যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। 

এদিন রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করেন। এরপর আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আগামী ৯ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত।

দুদকের করা মামলাটিতে পলাতক আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানি হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গমোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি। আর কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা।

গত ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদকের উপপরিচালক সালাউদ্দিন। সেই মামলার তদন্তে নেমে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের তথ্য পেয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা। তবে, মামলা দায়েরের আগেই পি কে হালদার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তদন্ত করে পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

নথি থেকে জানা গেছে, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজার মূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন চার হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ, এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া রাজধানীর ধানমণ্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানি হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন নির্মাণ করেছেন। যার মূল্য ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে দুই একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র‌্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা। এ ছাড়া পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গমোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি। এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে এক কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন পি কে হালদার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।