সংসদীয় গণতন্ত্র বিকাশে নারীর অংশগ্রহণ জরুরি : স্পিকার
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীর অর্থবহ অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। সংসদীয় গণতন্ত্র বিকাশে নারীর অংশগ্রহণ জরুরি।
বুধবার (২ আগস্ট) ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও ইউএসএইড’র যৌথ আয়োজনে ‘অ্যাডভান্সিং উইমেন্স লিডারশিপ ইন ইলেকশনস’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন স্পিকার।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডিরেক্টর লিপিকা বিশ্বাসের সঞ্চালনায় ‘নির্বাচনী প্রচারণা ব্যয় (নারী প্রার্থী) আইন, ২০২৩’ শীর্ষক খসড়া বিলের ওপর বক্তব্য দেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সিনিয়র ডিরেক্টর আব্দুল আলীম। সভায় ইউএসএইড বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মিশন পরিচালক সুঞ্জাই রেনল্ডস কুপার ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস বক্তব্য দেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাংলাদেশে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দীর্ঘ ২৪ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ও বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
স্পিকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সংবিধানে সংরক্ষিত নারী আসন রেখেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেল। কোনো গণতন্ত্রই নারীর অংশগ্রহণ ব্যতীত কার্যকর হতে পারে না। যে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারী, সে দেশের গণতন্ত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক।’
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনে জয় লাভ করতে রাজনৈতিক দলগুলো পুরুষ বা নারী প্রার্থী নয়, বরং নির্দিষ্ট একটি আসনের জন্য যোগ্য প্রার্থীকেই বাছাই করে। তাই, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অব্যাহতভাবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।’
স্পিকার বলেন, ‘একজন নারী তার চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে যেমনটি বলতে পারে, তা অন্যের পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তাই নারীকে শুধু নির্বাচিত হলেই হবে না, নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সে যেন অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করতে পারে, সেই সহায়ক পরিবেশও তৈরি করতে হবে নারীকেই।’
খসড়া বিল প্রস্তুতের জন্য ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করে কাজ করলে নারী প্রতিনিধি রূপে তার কাজের স্বীকৃতি পাবে।’ এ সময় তিনি নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চীফ অব পার্টি ডানা এল ওল্ডস বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন লাভের জন্য কাজ করছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
ডানা এল ওল্ডস বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’
সভায় সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, হাবিবা রহমান খান, মনিরা সুলতানা, রওশন আরা মান্নান, কাজী কানিজ সুলতানা, আদিবা আনজুম মিতা, অ্যারমা দত্ত, শামীমা আক্তার খানম, শেরিফা কাদের ও আফরোজা হকও বক্তব্য দেন।
সভায় ইউএসএইড ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, আমন্ত্রিত অতিথিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।