সরকারের কথা সত্য হলে তা প্রশংসনীয়, ডিএসএ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধি

Looks like you've blocked notifications!
সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গোয়েন লুইস। ছবি : এনটিভি

বহুল আলোচিত ও সমালোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তনের বিষয়ে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেছেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে শুনেছি, এটা সত্য হলে আমি খুশি। আমি টেকিনক্যাল পারসন নই, সাইবার নিরাপত্তা আইনটিও আমি দেখিনি। তবে তারা (সরকার) যা করেছে ও বলছে, তা সত্যি হয়ে থাকলে প্রশংসনীয়।’

আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন গোয়েন লুইস।

গোয়েন লুইস বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। আইনটিকে ভালোভাবে যাচাই করার মতো কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি আমি নই। আইনে কী পরিবর্তন করা হয়েছে, তা আমাদের ভালো করে দেখতে হবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন আর নেই, সেখানে নতুন আইন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।’

মন্ত্রিসভায় সোমবার (৭ আগস্ট) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশোধন এনে সাইবার নিরাপত্তা আইন করার প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত আইনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী ওইদিন তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আগেও বলেছি- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পূর্ণ বাতিল করা হবে না। এটিকে সংশোধন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের কিছু ধারা সংশোধন করে সাজা কমানোর পাশাপাশি অজামিনযোগ্য কয়েকটি ধারাকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, মানহানি মামলার জন্য কারাদণ্ডের বিধান বাদ দিয়ে শুধু জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। মানহানির অভিযোগে মামলা হলে এখন আর কেউ গ্রেপ্তার হবেন না।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মানহানির বিষয়টি রয়েছে। এতে বলা আছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে পেনাল কোডের (দণ্ডবিধি) সেকশন ৪৯৯-এ বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, সে জন্য তিনি অনধিক তিন বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর যদি কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃসংঘটন করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’ প্রস্তাবিত আইনে এই অপরাধের জন্য কারাদণ্ড বাদ দিলেও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন এই অপরাধের জন্য অনধিক ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে দণ্ডিত ব্যক্তি জরিমানা না দিলে আদালত তাকে তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দিতে পারবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা-২১ এর কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার জন্য দণ্ডের বিধান রয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি এই অপরাধ করেন, তাহলে তিনি অনধিক ১০ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’প্রস্তাবিত আইনে এই সাজা কমিয়ে সাত বছর করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া অনেকগুলো ধারায় দ্বিতীয়বার অপরাধের জন্য সাজা দ্বিগুণ বা সাজা বাড়ানো ছিল। প্রস্তাবিত আইনে প্রত্যেকটি ধারায় যেখানে দ্বিতীয়বার অপরাধের ক্ষেত্রে বাড়তি সাজার কথা আছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।