উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠানোর দাবি মির্জা ফখরুলের
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের উদ্বেগের মধ্যে অবিলম্বে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার (১২ আগস্ট) বনানীতে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই দাবি জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকালও আমি হাসপাতালে ছিলাম। বোর্ড হয়েছে। সেই বোর্ডের ডাক্তাররা খুব উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন যে, দেশনেত্রীকে যদি অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয় তাহলে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় বা বাংলাদেশে তাঁর চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব হবে কিনা, তারা এখনও নিশ্চিত নন। তাই ডাক্তাররা বারবার বলেছেন, তাঁর (বেগম খালেদা জিয়ার) চিকিৎসার জন্য বিদেশে এডভান্স সেন্টারে পাঠানো উচিত। একইসঙ্গে দেশবাসী এবং যারা দায়িত্বে আছেন তাদের আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন এবং তাঁর সুচিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অন্যায় ও গণতন্ত্র মুক্তির জন্য যে আন্দোলন শুরু হয়েছে এক দফা দাবির, সেই দাবি আদায় করে জনগণ একটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করবে এবং তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করবে।’
গুলশানের বাসা ফিরোজায় কয়েকদিন যাবত অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়লে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে গত বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, ডায়াবেটিস, কিডনি, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
সর্বশেষ গত ১২জুন বিএনপির চেয়ারপারসন এই হাসপাতালে শারীরিক চেকআপে আসেন। তখনও তাঁকে কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়েছে।
কোকোর কবর জিয়ারত
বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে বনানীতে তাঁর কবর জিয়ারত করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়াসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা ছিলেন। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় আরাফাত রহমান কোকো মারা যান।
কবর জিয়ারতের পর বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অত্যাচার ও নির্যাতনেই অকালে প্রাণ হারান আরাফাত রহমান কোকো। তাঁকে মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার নির্লজ্জ ও নির্মমভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করে। শারীরিক নির্যাতনে তিনি অসুস্থ হয়ে যান। অসুস্থ হওয়ার পর মালয়েশিয়াতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আজকে আরাফাত রহমান কোকোর জন্মদিনে আমরা যারা এখানে জিয়ারত করতে এসেছিলাম আমরা সবাই তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছি।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করেন বিএনপির মহাসচিব।