চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা

Looks like you've blocked notifications!
সাতকানিয়ার নিচু এলাকায় পানি থাকায় নৌকায় করে ঘরে ফিরছে মানুষ। ছবি : এনটিভি

বাড়িঘর ও আঙিনা থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। তবে, বন্যাদুর্গতরা ডায়রিয়া, আমাশয়, জণ্ডিস, টাইফয়েড ও চর্মরোগসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।

চট্টগ্রামের এই তিন উপজেলার অধিকাংশ ঘরে বন্যার পানি ওঠে।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ভেসে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে শুধু সাতকানিয়ায় মারা যান সাতজন। তাদের মধ্যে নৌকাডুবিতে চারজন এবং বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে তিনজন মারা যান। গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) একদিনে উদ্ধার হয় তিনজনের মরদেহ। এছাড়াও লোহাগাড়ায় দুজন ও চন্দনাইশে তিনজন মারা যায়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্যার পর বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সাধারণত বন্যার পানি নেমে যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শওকত এমরান বলেন, ‘বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ ডায়রিয়া, জণ্ডিস, চর্মরোগ ও টাইফয়েডসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। বন্যার পানির মধ্য দিয়ে যাদের চলাচল করতে হয়েছে, তারা স্ক্যাবিস ও কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিসসহ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

এলাকাবাসী জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় ইতোমধ্যে কিছু মানুষ নিউমোনিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

সাতকানিয়া উপজেলার আমিলাইশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রবল বর্ষণ ও বন্যার সময় চার দিনে ঠান্ডা লেগে অনেক শিশু ও বয়স্ক মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে এলাকায় তিনজন বয়স্ক ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় মারা গেছেন।’

কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, ‘আমার এলাকার অনেক মানুষ ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও চর্মরোগে ভুগছেন। বন্যাদুর্গত মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’  

এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কে এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘শনিবার (১২ আগস্ট) পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত খুব বেশি রোগী পাননি। তবে, বন্যায় বিভিন্নভাবে আহত রোগীরা আসছেন। এদের মধ্যে কেউ বন্যার পানির মধ্যদিয়ে হাঁটতে গিয়ে পড়ে অথবা গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আহত হয়েছেন। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় দুই-তিন দিন পর থেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্তরা আসা শুরু করতে পারে।’

চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ওয়াজেদ আলী চৌধুরী বলেন, ‘বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে যেকোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। হাসপাতালগুলোতে সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত এন্টিভেনাম ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়েছে।’