প্রশিক্ষণের জন্য পাহাড়ি এলাকায় জমি কেনে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’

Looks like you've blocked notifications!
সিটিটিসির সংবাদ সম্মেলন। ছবি : সিটিটিসি

কথিত নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’। এই জঙ্গি সংগঠনে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়েছেন। কেউ কেউ পুরো পরিবার নিয়ে কথিত হিজরতে বাড়ি ছাড়েন। এই জঙ্গি সংগঠনের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্টিউলি গ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ৫০ শতাংশ জমি কিনেন চিকিৎসক জামিল। ওই জমিতেই স্থাপন করা প্রশিক্ষণের কেন্দ্র।

আজ রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সম্প্রতি টাট্টিউলি গ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করে সশস্ত্র জিহাদে অংশগ্রহণের উদ্দেশে প্রস্তুতি নিতে যাওয়া ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি। অভিযানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বিপুল বিস্ফোরক, ৫০টি ডেটোনেটর, রামদাসহ বিভিন্ন ধারাল অস্ত্র, কমান্ডো রুট, পাঞ্চিং ব্যাগ ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ সামগ্রী, বিপুল পরিমাণ উন্নবাদী বই, নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘কথিত ইমাম মাহমুদ দলটির সদস্যদের বলেন, যারা এই জিহাদে অংশ নেবে, তারা সকলেই পরকালীন পুরস্কার পাবেন। জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের প্রথম ধাপ হল গৃহত্যাগ, তথা হিজরত। তাই জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণের উদ্দেশ্যে ইমাম মাহমুদের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার জন্য তারা সকলে ঘটনাস্থলে মিলিত হয়েছিল।’

আসাদুজ্জামান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যশোর, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন বয়সী লোকদের পরিবারসহ এবং পরিবার ছাড়া নিখোঁজ হবার বিষয়ে তথ্য পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করে সিটিটিসির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার এনায়েতপুর থানা থেকে ডা. সোহেল তানজীম রানা, যশোর জেলা থেকে ঢাকার নটরডেম কলেজ শিক্ষার্থী ফাহিম, জামালপুর থেকে এরশাদুজ্জামান শাহিনসহ আরও অনেকের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধানের একপর্যায়ে গত ৭ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম থানার গাবতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কথিত ইমাম মাহমুদের আহ্বানে হিজরতের মাধ্যমে সপরিবারে গৃহত্যাগ করে আসা ছয় নারী, আট পুরুষসহ মোট ১০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা আট শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান জানান, গত ১২ আগস্ট রাতে মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একই গ্রুপের সদস্য মো. ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ফরহাদ জিজ্ঞাসাবাদে কুলাউডার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বিষয়টি জানায়। এই তথ্যের ভিত্তিতে ‘অপারেশন হিলসাইড’ পরিচালনা করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান আসাদুজ্জামান।