শোক দিবসের কর্মসূচিতে

সাবেক মন্ত্রীকে অতিথি করায় নেতাকর্মীদের ক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল (বামে), সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস। ছবি : এনটিভি

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলকে বাদ দিয়ে সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।

আশানুর বিশ্বাস ঘোষিত কর্মসূচিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিনের নাম রাখা হয়নি। বর্তমান সংসদ সদস্যকে বাদ দিয়ে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাসের স্বামী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করায় বেলকুচিতে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের সঙ্গে আলোচনা না করে তাঁর নাম বাদ দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন না। দল থেকে যারা বহিষ্কার হয়েছিল তাদের সঙ্গে নিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া লতিফ বিশ্বাসকে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এমপিকে বাদ দিয়ে আশানুর বিশ্বাস তাঁর স্বামী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল। কিন্তু তাঁর নাম কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। দলের মধ্যে যারা বিদ্রোহী রয়েছেন এবং বহিষ্কার হয়েছিলেন তাঁদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সরকার বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা ঠিক হয়নি। সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিত ছিল। তিনি তো শুধু এমপি না দলের সভাপতি। দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হয়। কিন্তু তিনি তা করেননি। তার  এই সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবগত করা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন লতিফ বিশ্বাস। তিনি সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ছিলেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাপের কারণে লতিফ বিশ্বাসকে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্যের সঙ্গে কোন আলোচনা হয়নি। ব্যানার করার সময় তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে নেব।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস শোক দিবস উপলক্ষে যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাতে আমার মতামত নেওয়া হয়নি। তিনি দলের যারা বিদ্রোহী ও বহিষ্কার হয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এ বিষয়ে দলের সিনিয়ন নেতারাও কিছুই জানেন না।