গণতন্ত্র-ভোট-বাঁচার অধিকার দাও, নিত্যপণ্যের দাম কমাও : মির্জা ফখরুল

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো দিকে পথ নেই, উত্তরে সুউচ্চ পর্বতমালা আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, কোনো দিকে ওদের যাওয়ার আর পথ নেই। আর সময় নেই। মানে মানে এখনি পদত্যাগ করো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাও, সংসদ বিলুপ্ত করো, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করো। তিনি আরো্ বলেছেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের, কথা বলার, বাঁচার অধিকার দাও। তেল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম কমাও।’
আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। দয়াগঞ্জ থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে সায়েদাবাদ ব্রিজ, ধলপুর কমিউনিটি সেন্টার, গোলাপবাগ, কমলাপুর, বৌদ্ধমন্দির হয়ে খিলগাঁও এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গণমিছিলে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ সারা দেশকে এই আওয়ামী লীগ কারাগারে পরিণত করেছে। কেন আটক করে? বলেন তো, ভয়ে। ভয়ে আওয়ামী লীগের মুখ শুকিয়ে গেছে। তারা যে টাকা পাচার করেছে, তা নিয়ে চিন্তায় আছে। অবস্থা এখন আরও খারাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে শুনানি দাবি করছে সে দেশের সংস্থাগুলো।’
আওয়ামী লীগ সরকার টাকা চুরির আবারও ফন্দি বের করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এরা নাকি পেনশন ভাতা দেবে। এরা টাকা চুরির আরেকটা নতুন ফন্দি করছে। সেই টাকা চুরি করে ভোট করবে এরা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। ২৯ জুলাই আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে হায়েনার মতো তারা আক্রমণ করেছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের, কথা বলার, বাঁচার অধিকার দাও। তেল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম কমাও। এটাই আমাদের দাবি।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ লুটপাট করে সব শেষ করে দিয়ে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। এদেরকে না সরাতে পারলে দেশের অস্তিত্ব থাকবে না।’
জনগণ উত্তাল আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারকে সুনামির মতো নিশ্চিহ্ন করে দেবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘সরকার সংবিধানের দোহাই দেয়, কিন্তু কোন সংবিধান? বৈধ সংবিধান না এটা। আপনারা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের অবস্থা এখন আরও খারাপ। বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন বলছে বাংলাদেশের ওপর একটা শুনানি হোক। তারা সুষ্ঠ নির্বাচনে বাধা প্রদান করছে। নয়জন এখন আর আমেরিকা যেতে পারে না। তাদের সম্পদ কী হবে, তারা জানে না।’
গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘একটি কথাই বলা যায়, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। তার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আমাদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সকালে মার্কিনীদের গালি দেয় বিকেলে আবার ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে তারাই আমাদের বন্ধু।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।