পৃথক ধর্ষণ মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁর পত্নীতলার কাশীপুর এলাকার প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি। ছবি : এনটিভি

নওগাঁর পোরশার ইলাম গ্রামের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে এবং পত্নীতলার কাশীপুর এলাকার এক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের দায়ে পৃথক দুই মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালাত। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।  আজ সোমবার দুপুর ১২টায় এক আসামির অনুপস্থিতিতে এবং অপর আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি মকবুল হোসেন জানান, ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি পোরশায় এক মাদ্রাসাছাত্রী নানির বাড়ি যাওয়ার সময় কাশিতাড়া এলাকার হারুন শাহের আমবাগানে নিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ওই ছাত্রীর নানাকে খবর দিলে তিনি এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পোরশা থানায় ছাত্রীর নানা অভিযোগ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরাকুড়ি এলাকার ওসমানের ছেলে হ্যাপির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ দুপুর ১২টায় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে জনাকীর্ণ আদালতে পলাতক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশদেন বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার। আসামী পলাতক থাকার সাজা পরোয়ানাসহ তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। আসামি পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী এস.এম সারোয়ার হোসেন। জরিমানার টাকা ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌঁসুলি মকবুল হোসেন আরও জানান, পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামে প্রতিবন্ধী নারী ২০২০ সালের ২৭ মার্চ বেলা আড়াইটায় বাড়ির পেছনে শুকনো পাতা ঝাড়ু দিতে গেলে একই গ্রামের আসামি তার ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এই অভিযোগে প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী ২০২০ সালের ১ এপ্রিল পত্নীতলা থানায় একটি মামলা করেন। আদালতে আসামি ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালে ৮ জুন মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য সমাপ্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। আজ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। আসামি আগে থেকেই জেল হাজতে থাকায় তাকে সাজার পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট সোমেন্দ্রনাথ কুণ্ডু মামলা পরিচালনা করেন। জরিমানার অর্থ ধর্ষণের শিকার নারীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।