কৃষককে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা সেই সুদি কারবারি আটক

Looks like you've blocked notifications!
সুদি কারবারি আব্দুল আজিজের বাড়িতে শেকলে বাঁধা কৃষক আসাদ আলী। ছবি : এনটিভি

নাটোরের গুরুদাসপুরে পাওনা টাকার জন্য কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে এনে শিকলবন্দি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সুদের কারবারি আব্দুল আজিজকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার মসিন্দা থেকে তাকে আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম আজ রোববার সকালে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মোবাইলফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে আজ ভোর ৪টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার মসিন্দা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নাটোরের সুদ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ তার লোকজন নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রাম থেকে কৃষক আসাদকে তুলে এনে নিজ বাড়িতে শিকলবন্দি করে রাখে। বিষয়টি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। বিষয়টি টের পেয়ে কৃষককে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় আব্দুল আজিজ। এক পর্যায়ে কৃষককে ছেড়ে দিয়ে গা-ঢাকা দেয় সে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুদের টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় আসাদ আলী (৫৫) নামে ওই কৃষককে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ধরে এনে পায়ে আর কোমড়ে শেকল দিয়ে বেঁধে আটকে রাখেন সুদ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ (৩৫)। শেকলে বাঁধা কৃষক আসাদ আলীর ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে সন্ধ্যায় এসে আব্দুল আজিজের বাড়িতে কাউকে পায়নি।

পরিবারের অভিযোগ, সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামের কৃষক আসাদ আলী আর্থিক সংকটের কারণে পার্শ্ববর্তী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মসিন্দা বাহাদুরপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের কাছ থেকে সুদে ৮০ হাজার টাকা নেন। ২০ হাজার টাকা সুদসহ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য কিছুদিন সময় নেন। কিন্তু দুর্ঘটনাজনিত কারণে অবশিষ্ট ৫০ হাজার টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন আসাদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুদ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ কোন কথা না শুনে শনিবার সকালে দলবলসহ আসাদকে বাড়ি থেকে তুলে গুরুদাসপুরে আব্দুল আজিজের বাড়িতে নিয়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। একই সাথে তার পরিবারকে টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

খবর পেয়ে শনিবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ সুদ ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের বাড়িতে হানা দিলেও সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানান গুরুদাসপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান। তবে পাওনা টাকার জন্য আসাদকে ধরে এনে শেকলবন্দি করার কথা স্বীকার করেন ওসি আব্দুল আজিজ।