বগুড়ায় ডিবির নির্যাতনে আইনজীবীর সহকারীকে হত্যার অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!
অ্যাম্বুলেন্সে হাবিবুর রহমান হাবিবের মরদেহ। ছবি : এনটিভি

বগুড়ায় আইনজীবীর একজন সহকারীকে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ দাবি করেছে, হত্যা মামলার ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম হাবিবুর রহমান হাবিব (৩৬)। তিনি বগুড়া আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মঞ্জুরুল ইসলামের সহকারী ছিলেন। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার জোড়া দামারপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।

আইনজীবী মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতে আমার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন হাবিব। তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। মঙ্গলবার কাজ শেষে বাড়ির উদ্দেশে বের হলে আদালত ফটক থেকে তাকে গাড়িতে তুলে নেয় ডিবি পুলিশ।’

মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘হাবিবুরকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর বিনা দোষে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। রাত নয়টা পর্যন্ত বিষয়টি গোপন রাখে পুলিশ। পরে খবর পেয়ে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে গিয়ে হাবিবুরের মরদেহ দেখতে পাই।’

মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিক আমিন বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে অচেতন এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে ডিবি পুলিশ। এরপর তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। এর কিছু সময় পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক মোস্তাফিজ হাসান বলেন, ‘মাস দুয়েক আগে শাজাহানপুর থানায় খুকি বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধা খুন হন। খুনের মামলা তদন্ত করছে শাজাহানপুর থানা পুলিশ। ডিবি পুলিশ মামলার ছায়া তদন্তে কাজ করছিল। খুনের এই মামলায় একজন বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাবাদের জন্য আটক করা হয়। ওই বৃদ্ধার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবুরকে আটক করা হয়। ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর আটক বৃদ্ধাকে দেখে বুকে ব্যথা অনুভব করেন হাবিবুর। তাকে হাসপাতালে ভর্তির দুই ঘণ্টা পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।’

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. স্নিগ্ধ আখতার বলেন, ‘অবশ্যই এ মৃত্যু দুঃখজনক। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। কমিটি নির্ণয় করবে কার কতটুকু দায় রয়েছে। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, মরদেহে অত্যাচার করার কোনো চিহ্ন নেই। আটক করে আনার পরেই তিনি (হাবিবুর রহমান হাবিব) অসুস্থ বোধ করেন। তার সাক্ষাৎকার নেওয়ায় কোনো সুযোগই পাওয়া যায়নি। এরপর তাকে হাসপাতালে আনা হয় এবং চিকিৎসা চলছিল। তার শরীরে কোনো মার বা নির্যাতনের চিহ্ন সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত। আইন অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।’