নিষেধাজ্ঞায় ৫ কেজি করে বেশি চাল পাবেন চাঁদপুরের জেলেরা

Looks like you've blocked notifications!
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় অবসয় সময়ে জাল মেরামত করছেন জেলেরা। ছবি : এনটিভি

চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য আগামী ২২ দিন সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাঝ ধরার জন্য নিবন্ধিত ৪৩ হাজার ৭৭২ জন জেলেকে সরকারের পক্ষ থেকে ভিজিএফ সহায়তা দেওয়া হবে। এ বছর পাঁচ কেজি করে চাল বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আগে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এখন ২৫ কেজি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২ টার পর আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে সব ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। দেশব্যাপী ইলিশ পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। এ ছাড়া চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না। এই আইন অমান্যকারীকে মৎস্য আইনে সাজা দেওয়া হবে।

মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকাসহ সব সরঞ্জামাদী তীরে উঠিয়েছেন জেলেরা। পরিবার-পরিজনের ভরন-পোষণ নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। সরকারি সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন অনেক জেলে। প্রকৃত জেলেদের সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি জানান তারা।

চাঁদপুর সদরের ইব্রামহীমপুর ইউনিয়নের জেলে বিল্লাল খান অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবছর সরকার দুবার ইলিশ ধরতে নিষেধ করে। আমরা সব সময়ই নিষেধাজ্ঞা পালন করি। কিছু জেলে আছেন, যারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরেন। যারা ধরেন, নিরুপায় হয়ে ধরেন। কারণ সরকার যে চাল দেয় তা দিয়ে কিছু হয় না। চালের সঙ্গে আরও জিনিস লাগে, তার খরচ কে দেবে। আমাদের দাবি চালের সঙ্গে যেনো আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।’

শহরের পুরান বাজার এলাকার জেলে মোহাম্মদ দিদার আলী বলেন, ‘এ বছর নদীতে ইলিশ কম। সারা দিন জাল ফেলেও তেমন ইলিশ উঠেনি। ধার-দেনা করে আমাদের চলতে হয়। এর মধ্যে ২২ দিন মাছধরা নিষিদ্ধ। নৌকা-জাল উঠিয়ে ফেলব। অন্য কাজ করে সংসার চালাতে হবে।’

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, ‘চাঁদপুর মাছঘাটে ২২ দিন ইলিশ কেনা-বেচা বন্ধ থাকবে। একটা মাছও বিক্রি হবে না। আমরা সরকারের সব নিয়ম মানি। সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়। কিন্তু মাছঘাটের শ্রমিকরা কোনো সহায়তা পায় না। আমি প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাব, যাতে মাছঘাটের শ্রমিকদের সহায়তা করা হয়।’

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ‘পদ্মা-মেঘনা নদীতে ৪৩ হাজার ৭৭২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এ বছর সবাইকে পাঁচ কেজি করে চাল বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আগে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এখন ২৫ কেজি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ হয়েছে। অনেক জায়গায় বিতরণ শুরু হয়েছে। আশা করি জেলেরা মাছধরা থেকে বিরত থাকবেন।’

মো. গোলাম মেহেদী আরও বলেন, ‘সরকারের এই আদেশ অমান্য করে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে এক থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এ বছর নিষেধাজ্ঞা সফল হলে আগামীতে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়বে।’