বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে কোনো আপত্তি নেই : ডিএমপি কমিশনার

Looks like you've blocked notifications!
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি : এনটিভি

বিএনপির নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে পুলিশের কোনো আপত্তি নেই জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, দলটির কার্যালয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরাই তালা মেরেছে। 

আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি কার্যালয়ে তারা নিজেরাই তালা মেরে রেখেছে। তারা এখন সেখানে আসে না। কেন আসে না এটা তারাই ভালো বলতে পারবে। আমাদের পুলিশ সেখানে সবসময় থাকে নিরাপত্তার জন্য। একবারে ১২ মাস, ৩০ দিনই কিন্তু পুলিশ সেখানে পাহারায় থাকে। তারা যদি অফিস খুলে, কার্যক্রম করে সেখানে আমাদের কোনো কিছু করণীয় নেই। আমাদের আপত্তি নেই। আর কখনই ছিল না।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ইতোপূর্বেও অনেক আন্দোলন হয়েছে। হরতাল ও অবরোধ হয়েছে, পুলিশ তা যথাযথ কৌশলের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। এবং আগামীতে যে ধরনেরই সমস্যা আসুক না কেন, যে ধরনের আন্দোলনই আসুক না কেন সেগুলো মোকাবিলা করার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। সেটি যথাযথভাবে করা হবে।’

বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা বিরোধী দলগুলোর অবরোধ ও হরতালের সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়া প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আপনারা জানেন যে যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেই যানবাহনে যারা যাত্রী ছিল, যারা ড্রাইভার ছিল, যারা হেলপার ছিল, তারা তাদের নৃশংসভাবে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। হত্যা করা হয়েছে। নাঈম নামে একজন বাসের হেলপারকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং তার সাথী রবিসহ আরও অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।’

‘এই নৃশংসতা ও রাজনীতি এটি কিন্তু সম্পূর্ণ বিরোধী। কিন্তু, তারপরেও আমরা এটি দেখতে পাচ্ছি। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের দেখতে এসেছি, সমবেদনা জানাতে এসেছি। আমরা এখানে যারা বাসের শ্রমিক ছিল তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার চিন্তা করছি। তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। বাস মালিক সমিতি ও বাস শ্রমিক সমিতির সঙ্গেও কথা বলেছি।’

যানবাহনের আগুন দেওয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সকল প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে জানিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা হাতেনাতে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এবং অন্যান্য আরও কয়েকজন গ্রেপ্তারসহ এই অগ্নি সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, যারা এই নৃশংস কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা যেখানে লুকিয়ে থাকুক না কেন কাউকে কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

পুলিশ কাজ করছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এই অবরোধ ও অবরোধ পরবর্তী সময় পুলিশ কিন্তু দিনরাত রাস্তায় রয়েছে। জনগণের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এখানে কিন্তু, বাসের মালিক, শ্রমিক সবাই আমাদের সঙ্গে রয়েছে। তারা আমাদের সাহায্য করছে। স্থানীয় জনগণ, সুধীজন, বুদ্ধিজীবী সবাই কিন্তু আমি মনে করি, দেশের যে চলমান উন্নয়ন ধারা রয়েছে সেটির পক্ষে রয়েছে। পুলিশ যথাযথভাবে কাজ করছে।’

যানবাহনে দেওয়া আগুনকে চোরাগোপ্তা হামলা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলার জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে আমরা বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি। সেই নির্দেশনার ফলে জনগণের সহযোগিতায় আমরা কিন্তু বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি, এদেরকে রুখে দেওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। যেভাবে জনগণ সহযোগিতা করছে, আমরা আরও সহযোগিতা চাই। তাহলে চোরাগোপ্তা ও নাশকতা থেকে আমরা সহজেই মুক্তি পেতে পারি।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছি, বিশেষ করে যে সমস্ত জায়গা থেকে বাসে ওঠে ও যে সমস্ত জায়গা থেকে বাস থেকে নামে, সে সমম্ত জায়গায় কিন্তু পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ বাসের ভেতরে ওঠে ছবি তুলছে, ড্রাইভার-হেলপাররাও ছবি তুলে রাখছে। চেকপোস্ট করা হচ্ছে। বাসের ভেতরে যারা উঠবে তাদের পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় চেক করছে।’ 

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে ছিল বিএনপির মহাসমাবেশ। রাজনৈতিক এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এরপরই দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কার্যালয় ফটকে দেওয়া হয় তালা। সেই থেকে এ পর্যন্ত তালা ঝুলছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।