‘পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করতে ভয় দেখালে পাল্টা জবাব দিতে হবে’
পোশাক কারখানার মালিকরা আন্দোলন দমন করতে ভয় দেখালে এর পাল্টা জবাব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতার।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাসলিমা আখতার এসব কথা বলেন।
বাবুল হোসেনের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার-গ্রেপ্তার-গুলি-নির্যাতন বন্ধ, ২৫ হাজার টাকা মজুরি ও ঘোষিত মজুরি পুনর্বিবেচনার দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে তাসলিমা আখতার বলেন, ‘মালিকরা আন্দোলন দমন করতে ভয় দেখাবে, কিন্তু এ ভয়ের পাল্টা জবাব আমাদের দিতে হবে। বাবুল হোসেনকে গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে ২০ ঘণ্টা গুম করে রাখা হয়েছিল। এর পরে অজ্ঞাতনামা মামলায় ভাঙচুরের অভিযোগ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। শুধু বাবুল হোসেন নয় বহু শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তাসলিমা আখতার বলেন, ‘গত এক বছর ধরে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আমরা আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু, আমরা দেখলাম সরকার ও মালিকপক্ষ পরামর্শ করে ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি ঘোষণা করেছে। এ মজুরি শ্রমিকরা প্রত্যাখ্যান করে রাজপথে নামলে শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষা করে মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার এবং শ্রমিক হত্যার মতো কাজ জারি রেখেছে তারা। আঞ্জুয়ারা, রাসেল, ইমরানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের অপরাধ কী? আমাদের অপরাধ কী? আমরা শ্রমিকদের খেয়ে পরে বাঁচার স্বার্থে আন্দোলন করছি।’
মালিকদের উদ্দেশে তাসলিমা আখতার বলেন, ‘তারা (মালিকরা) শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজে, রাজনীতি খোঁজে। রাজনীতির বাইরে কিছু নেই। খেয়ে-পরে বাঁচার অধিকার শ্রমিকদের রাজনৈতিক অধিকার, বিক্ষোভ করা, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সংগঠিত হওয়া শ্রমিকদের সাংবিধানিক অধিকার। শিল্পের সমৃদ্ধির হিস্যা শ্রমিকদের দিতে হবে।’
এ সময় তাসলিমা আখতার মজুরি পুনর্বিবেচনা করে ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানান এবং বাবুল হোসেনসহ সব শ্রমিক ও শ্রমিক নেতাদের মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসঙ্গে নিহত শ্রমিকদের এক জীবনের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান ও দোষীদের শাস্তিও দাবি করেন।
তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও আশুলিয়া থানা সভাপ্রধান জিয়াদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা হযরত বিল্লাল, রুপালী আক্তার, মামুন হোসেন প্রমুখ।