উপজেলা বিএনপির কার্যালয় এখন নৌকার নির্বাচনকেন্দ্র
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়টি এখন ‘নৌকার নির্বাচনকেন্দ্র’। আজ মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজাপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাহিম হোসেন ও বর্তমান রাজাপুর শহর ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি মো. রমজান মৃধা এই সাইনবোর্ডটি টানিয়ে দেন।
উপজেলা বিএনপির কার্যালয়টি ঝালকাঠি-১ আসনে (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আওয়ামী লীগ মনোনীত আলোচিত প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরের ব্যক্তিগত জমিতে করা। তাই বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা এখন নৌকার নির্বাচনি প্রধান কার্যালয় লেখা একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছেন।
জানা যায়, রাজাপুর-কাঁঠালিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি। শত চেষ্টা করেও বিএনপির এ ঘাঁটিতে আঘাত হানতে পারেনি আওয়ামী লীগ। এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম)। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয়, ১৯৯১ সালে পঞ্চম, ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থাকালীন প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তাঁকে দেশ ছাড়তে হয়। সে কারণে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। আর ২০১৪ সালে বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বয়কট করায় তিনি প্রার্থী হননি। তাঁর মালিকানাধীন রাজাপুর বাইপাস মোড় এলাকায় দুতলাবিশিষ্ট একটি ভবনে ২০০৩ সাল থেকে উপজেলা বিএনপির স্থায়ী প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। গত ৩০ নভেম্বর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকার মনোনয়ন নেন। পরে তাঁর মালিকানাধীন ভবন থেকে বিএনপির সব সাইনবোর্ড-ব্যানার সরিয়ে ফেলার জন্য তাঁর অনুসারিদের বললে তাঁরা অন্যত্র সরিয়ে নেয়। আজ সেখানে নৌকার নর্বাচনি সাইনবোর্ড উঠানো হয়। এদিকে ২০ বছরের বিএনপির প্রধান কার্যালয়ে নৌকার নির্বাচনি কার্যালয় করায় উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এক সময়ে যেই নেতার কারণে গর্বে বুক ভরে যেত আজ সেই নেতাকেই বেঈমান, মীরজাফরসহ বিভিন্ন উপাধি দিচ্ছেন বিএনপির কর্মীরা।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা ভবনটি শাহজাহান ওমরের ব্যক্তিগত জায়গায় তাঁর নিজের অর্থে নির্মাণ করা। এত দিন তিনি বিএনপিতে ছিলেন, তাই বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এখন তিনি আওয়ামী লীগে গেছেন তাই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। এখনে আমাদের কিছু বলার নেই।’
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এ এইচ এম খায়রুল আলম সরফরাজ বলেন, তিনি যখন ঝালকাঠিতে আসছেন তখন আমাকে বলছেন তাঁর ওই অফিস রাজাপুর আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে হিসেবে ব্যাবহার করবেন। তখন তাকে বলছি রাজাপুরে আওয়ামী লীগের অফিস আছে। আপনি নির্বাচনি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। নতুন কার্যালয়ে যাব কি যাব না সেটা পরে দেখা যাবে।’
এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আমার জমিতে আমি একটি ভবন করেছি। আমি যে দলে আছি সেই দলেরই অফিস থাকবে এটা। ওখান থেকে আমি নৌকার নির্বাচনি কাজ পরিচালনা করব।’