নাশকতার মামলায় কারাগারে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন বিএনপিনেতা

Looks like you've blocked notifications!
নাশকতার মামলায় কারাবন্দি হয়ে মারা যাওয়া বিএনপিনেতা এ কে আজাদ সোহেল। ছবি : এনটিভি

নাশকতার মামলায় কারাবন্দি হয়ে এ কে আজাদ সোহেল (৪৫) নামে এক বিএনপিনেতা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) মারা যান।

এ কে আজাদ সোহেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ন্দহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লেলিন জানান, গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ কে আজাদ সোহেলকে আটক করে পুলিশ। এরপর নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। আইনজীবী শামীম হোসেনের মাধ্যমে পরিবার তাঁর জামিন আবেদন জানালেও জামিন পাননি তিনি। 

বিএনপির এই নেতা জানান, গত ২৯ নভেম্বর কারাগারে স্ট্রোক করেন সোহেল। তাঁকে প্রথমে নাটোর সদর এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরের দিন ৩০ নভেম্বর তাঁকে জামিন দেন আদালত। জামিন পাওয়ার পর পরিবারের লোকজন কারাগার থেকে তাঁকে আনতে গেলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায় তিনি অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, সোহেলকে রাজশাহী মেডিকেলের বারান্দার বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। জামিনের পর কারা কর্তৃপক্ষের মারফতে পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনা জানলে তারা গিয়ে সোহেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে আজ তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত সোহেলের বড় ভাই শামীম হোসেন বলেন, বিনা অপরাধে আমার ভাইকে গ্রেপ্তার করে জেলে ভরে পুলিশ। নাটোর জেলে অসুস্থ হয়ে রাজশাহীতে আজ দুপুরে মারা যায় সে। 

এবিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, এ কে আজাদ সোহেলকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সেখানে স্ট্রোক করেন তিনি। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। 

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর জেলা কারাগারের জেলার মোশফিকুর রহমান বলেন, ‘২১ নভেম্বর এ কে আজাদ সোহেলকে জেলহাজতে নিয়ে আসা হয়। সে নাশকতার মামলার আসামি ছিল। ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় অসুস্থ হলে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার ডাক্তাররা তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করলে আমরা তাকে রাজশাহীতে পাঠিয়ে দেই। সে রাজশাহী কারাগারের আওতায় চিকিৎসাধীন ছিল।’ 

নিহত এ কে আজাদ সোহেলের অসুস্থতার কথা পরিবারকে জানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হরহামেশাই অনেকে এ রকম অসুস্থ হয়। রাজশাহীর দূরত্ব অল্প হওয়ায় পরিবারকে খবর দেওয়া তখন জরুরি মনে হয়নি। 

এদিকে সাবেক এ যুবলদনেতার মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়েছেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন।