মানবাধিকার লঙ্ঘনের সীমা অতিক্রান্ত হয়ে গেছে : টিআইবি

Looks like you've blocked notifications!
আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন সুলতানা কামাল। ছবি : ফোকাস বাংলা

টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, “কেউ বলছেন জিরো টলারেন্স থেকে এখন সহনশীল হয়ে গেছে। আমি এর সঙ্গে যোগ করতে চাই, শুধু সহনশীল নয়, প্রশ্রয় দেওয়া হয়। শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে দুর্নীতি, শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে মানবাধিকার লঙ্ঘন, শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে অন্যায়-অবিচার-অনাচার, তা নয়, আশ্রয়ও দেওয়া হচ্ছে। সহ্যের থেকে সীমা আরেকটু অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।”

আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক আলোচনাসভায় সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।

নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, “গণতন্ত্র ও উন্নয়ন পরস্পরের পরিপূরক। উন্নয়নকে অর্থবহ করতে হলে গণতন্ত্র অপরিহার্য। আর গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। কোনো বিরুদ্ধ মত দমনের মাধ্যমে কখনো কোনো উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না।”

অনুষ্ঠানে টিআইবির পক্ষ থেকে দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার, ২০২৩ তুলে দেওয়া হয়। এবার আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রামের একুশে ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম, জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে দৈনিক কালের কণ্ঠের সাভার প্রতিনিধি জাহিদ হাসান, টেলিভিশন বিভাগে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মিসবাহ। এ ছাড়া টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘তালাশ’।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাস্তবে উন্নয়নকে যদি জনগণের জন্য, জনস্বার্থে অর্থবহ করতে হয়, তাহলে গণতন্ত্র অপরিহার্য। আর গণতন্ত্র নিশ্চিত করে মানুষের বাক্‌স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাস্তব উন্নয়ন অর্থবহ করা যায়। গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম হাতিয়ার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য যেসব অরাষ্ট্রীয় শক্তি আছে, তার মধ্যে শীর্ষে গণমাধ্যম। 

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির সহসমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ) জাফর সাদিক। তিনি বলেন, বাক্‌স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইন হচ্ছে না, আইন হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। বাক্‌, মত ও চিন্তার স্বাধীনতার বিকল্প শুধু এর পূর্ণ স্বাধীনতাই হতে পারে। কোনো বিরুদ্ধ মত দমনের মাধ্যমে কখনোই কোনো উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না। বাক্‌, মত ও চিন্তার শর্তহীন স্বাধীনতা নিশ্চিতে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজসহ সরকার, রাষ্ট্র—সংশ্লিষ্ট সবার যা যা করণীয় দরকার, তা–ই করতে হবে। 

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীর সদস্য ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী, বৈশাখী টেলিভিশনের পরিকল্পনা পরামর্শক জুলফিকার আলী মানিক, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা–বিষয়ক প্রশিক্ষক বদরুদ্দোজ্জা বাবু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক আশীষ সৈকত।