সরকার দেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে : গণতন্ত্র মঞ্চ
ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকার দেশে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আজ রোববার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে মানববন্ধন ও সমাবেশে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন। সমাবেশ পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)-র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আনসার আলী দুলাল, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশ ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান হাবিব।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ভোটাধিকার হরণ করে জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকার গুম খুন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ গায়েবি মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক দমন পীড়ন করে সর্বজনীন মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন ঘটিয়ে চলেছে। একতরফা তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে আরও একটি একতরফা তামাশার নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাঁয়তারা করছে। খেয়াল খুশি মত হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, অত্যাচার-উৎপীড়ন এবং ফরমায়েসী সাজার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতাকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে। বাংলাদেশে যে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আছে সেটাই এখন বোঝা যায় না। এই কমিশন দেশের মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কোনো উদাহরণ আর রাখছে না। তারা ন্যূনতম দায়িত্ব পালন না করে সরকারের তাঁবেদারি করে চলেছে। এইভাবে তারা বাংলাদেশকে ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক পরিসরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে স্যাংশনের মুখোমুখি করছে। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ও কূটনৈতিক দিক থেকে ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক খাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, উন্নয়নের নামে গণতন্ত্র হরণ করে সরকার লুটপাট, টাকা পাচার, ব্যাংক লোপাট এবং সিন্ডিকেটের এক ভয়াবহ রাজত্ব তৈরি করেছে। দেশে রিজার্ভ সংকট এবং ঋণের বোঝা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে একটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় আসন্ন হয়ে উঠছে। সরকারের লুটপাটের রাজত্ব যে দেশে একটা দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি আসন্ন করে তুলছে সেটা আঁচ করে প্রধানমন্ত্রী সেই দায় বিরোধীদলের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে এইভাবে ছিনিমিনি খেলা জনগণ কোনভাবেই মেনে নেবে না।
এসময় চলমান আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি হিসেবে আগামী ১২ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টা দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।