রমজানে ন্যায্যমূল্যে মাছ, মাংস-ডিম বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে : প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ছবি : এনটিভি

আসন্ন রমজান মাসে প্রান্তিক মানুষের জন্য ন্যায্যমূল্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম বিক্রির পরিকল্পনার রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান মন্ত্রী।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘উৎপাদন ও মজুত থাকার পরও তুলনামূলক বিচারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এর কারণগুলো প্রধানমন্ত্রী নিজেই খতিয়ে দেখছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ডিমের উৎপাদন পর্যাপ্ত, মাছের উৎপাদনও যথেষ্ট। সুতরাং, এগুলো ঠিক কী কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে পৌঁছানো যাচ্ছে না, সেটি খতিয়ে দেখার বিয়ষটি মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে।’

মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আগামী রমজানকে সামনে রেখে ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, তেল দেওয়ার মতো করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষত বস্তিনির্ভর এলাকা, দরিদ্র মানুষের বসবাসের জায়গায় ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে বিক্রয়ের পরিকল্পনা করেছে। বাজারের চেয়ে কমমূল্যে এসব জায়গায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম পাওয়া যাবে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে কিছু পরিকল্পনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত, দৈনন্দিন খাদ্য ও পুষ্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর চেয়ে বেশি দূরে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য। আমাদের অবস্থান আরও উন্নততর জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

দুগ্ধজাত পণ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য ডেইরি খাতে আরও কিছু কাজ করা প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেন, ‘মা ইলিশ ও বাচ্চা ইলিশ (জাটকা) ধরার প্রবণতা বন্ধে একটা নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা নিষেধ থাকে, যার সুফল পাওয়া যায়। এটি চলমান রাখা হবে। জেলেদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।’ 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ, গবাদিপশুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতি বছর কোরবানিতে প্রায় এক কোটি পশু কোরবানি হয়। এক্ষেত্রে বাইরে থেকে আমদানি নির্ভরতা একেবারেই নেই।’ 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিদেশ থেকে যেসব সহায়ক কাঁচামাল, ওষুধ, ফিড আমদানি করতে হয়। সেসবের মূল্যবৃদ্ধি কেন হয়, দামের তারতম্য কী হয়, সে বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।’

আব্দুর রহমান বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই এই খাতে কাঁচামালসহ অন্যান্য কিছু আমদানি যাতে আলাদা বিবেচনা করা যায়, সে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আনা হবে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জড়িত সিন্ডিকেট বন্ধ করার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ডিকেটকে কোন ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আইনগত কাঠামোর মধ্যে এদের একটা ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি এদের বিরুদ্ধে একটা সামাজিক ক্যাম্পেইনও তৈরি করতে হবে। সিন্ডিকেটের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স। এটি কোন জায়গায় কীভাবে হয়, সেটি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’